সিরিজ জয়ের হাতছানি মাশরাফিদের
২০ জানুয়ারি ২০১৬, ০১:৩১
ওয়ানডে এবং টেস্ট ক্রিকেটে ২০১৪ সালে হারের বৃত্তে বন্দী ছিল বাংলাদেশ। কোনোভাবে মিলছিল না জয়ের দেখা। পরে মুশফিকুর রহিমকে সরিয়ে ওয়ানডে এবং টি২০ অধিনায়ক করা হয় মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। তারপর ওই বছরেই পরাজয়ের বৃত্ত ফুড়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ে ফিরেছিল টাইগাররা। বছরখানেক পর সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আবারো সিরিজ জয়ের হাতছানি মাশরাফিদের।
খুলনায় চার ম্যাচ টি২০ সিরিজর প্রথম দুটি জিতে এরই মধ্যে ২-০তে এগিয়েও রয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। তাই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় মাশরাফিরা। তাও আবার টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি২০ সিরিজ জয়ের হাতছানি। অপরদিকে টানা দুই ম্যাচে হারা সফরকারী জিম্বাবুয়ের জন্য সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচ। তারা এ ম্যাচে হারলেই টি২০ সিরিজ জিতে নেবে টাইগাররা। এমন সমীকরণ সামনে রেখে বুধবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় টি২০ ম্যাচে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে জিম্বাবুয়ে। বেলা তিনটায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে বিটিভি ও গাজী টিভিতে।
চার ম্যাচের টি২০ সিরিজের শুরু থেকে কম্বিনেশন নিয়ে কথা বলতে বলতে সিরিজ জয়ের ভাবনা আড়ালে পড়ে গেছে। সৌম্য সরকার যখন সংবাদ সম্মেলনে আসলেন তখনও তাকে কেউ সিরিজ জয় নিয়ে প্রশ্নই করছেন না। কে যেন পাশ থেকে মনে করিয়ে দিলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে এই সিরিজ জয়ের কথা মনে আছে কী না? সৌম্য বলেন, ‘সব সময় যেমন জয়ের জন্য মাঠে নামি, কালও (বুধবার) তেমনি জয়ের জন্যই মাঠে নামবো।’তবে তৃতীয় টি২০তে নতুনের কেতন উড়বে শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে।
সিরিজের প্রথম দুটি টি২০ জয়ের পরও খুলনায় দর্শকদের ম্যাচ দেখার আগ্রহ একটুও কমেনি। তবে জাতীয় দল রয়েছে প্রস্তুতি ম্যাচের আমেজে। আগের ম্যাচে দুটি অঘটন নিয়ে মাঠ ছেড়েছে স্বাগতিকরা। ব্যাটিংয়ের সময় মুশফিকুর রহিমের হ্যামস্ট্রিং এবং শেষ ওভারে বোলিংয়ের সময় মুস্তাফিজুর রহমানের চোট। তাই শেষ দুই ম্যাচের জন্য মুস্তাফিজুরকে আগে থেকেই রেস্ট নেয়ার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচকরা। তবে চোটে পড়ার কারণেই ছিটকে যেতে হয়েছে মুশফিককে।
যদিও প্রথম দুই ম্যাচের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিদ্ধান্তে খুব বেশি এগোতে পারেনি বাংলাদেশ টিম ম্যানেজম্যান্ট। তৃতীয় টি-২০-তে তাই অভিষেক হয়ে যেতে পারে তিন ক্রিকেটারের। আগের দুই ম্যাচে একাদশে সুযোগ না পাওয়া ইমরুল কায়েস বুধবার ব্যাট করতে পারেন মুশফিকের জায়গায়। মাশরাফির সঙ্গে বোলিং আক্রমণে দেখা যেতে পারে আবু হায়দার রনি ও মোহাম্মদ শহীদকে। অলরাউন্ডার হিসেবে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও বিবেচনায় রয়েছেন।
তাই চার ম্যাচের এই সিরিজে অবশ্য মধুর সমস্যায় পড়েছেন টিম ম্যানেজম্যান্ট। আগের দুই ম্যাচে নুরুল হাসান ও শুভাগত হোমকে যে কারণে দলে নেয়া হয়েছিল, তারা সেটা দেখানোর সুযোগ পাননি। তার আগেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচের ফলাফল যাই হোক বাংলাদেশ দলের নজর থাকবে নতুনদের পারফরম্যান্সের ওপর।
স্বাগতিক বোলারদের জন্যও সুযোগ থাকছে। অবশ্য একাদশ সাজানো নিয়ে এখনো ভাবনায় রয়েছে টিম ম্যানেজম্যান্ট। একগাদা নতুনের মধ্যে কার অভিষেক করানো যায় সেই অপেক্ষায় তারা। আবু হায়দার রনি বোলিংয়ের পাশাপাশি হাত খুলে খেলতেও পারেন। জোরালো শট আছে মোহাম্মদ শহীদের হাতেও। মঙ্গলবার দুজনেই খানিকটা সময় নেটে ব্যাটিংটাও ভালোভাবেই ঝালিয়ে নিলেন।
তবে আগের দুটি ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের সিঙ্গেল রান কম নেয়া নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। সৌম্য অবশ্য জানালেন, সিঙ্গেলের দিকে তিনিও বেশি করে নজর দেবেন।
অপরদিকে মুস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন, মুশফিকুর রহিম দলে না থাকায় সুযোগ হিসেবে দেখছেন জিম্বাবুয়ে দলের কোচ ডেভ হোয়াটমোর। বাংলাদেশের মতো তাদের পরিকল্পনাতেও টি২০ বিশ্বকাপের দল সাজানো। জয়-পরাজয় নিয়ে তাদের মাথা ব্যথাও কম।
তবে আগের ম্যাচে বিশ্রামে থাকা এল্টন চিগুম্বুরা তৃতীয় একাদশে ফিরতে পারেন। ম্যাচ নিয়ে জিম্বাবুয়ে কোচ বলেন, ‘তারা (মুস্তাফিজ-আল আমিন) দলে না থাকায় আমাদের সুযোগটা ভালো। তবে আমরা এখানে এসেছি নিজস্ব একটা পরিকল্পনা নিয়ে। সেদিকেই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
সম্ভাব্য বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি মর্তুজা, আবু হায়দার রনি, ইমরুল কায়েস, মাহমুদুল্লাহ, মোহাম্মদ শহীদ, নুরুল হাসান সোহান, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, তামিম ইকবাল ও মোসাদ্দেক হোসেন।
সম্ভাব্য জিম্বাবুয়ে একাদশ: ভুসি সিবান্দা, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, রিচমন্ড মুতুম্বামি (উইকেট কিপার), শন উইলিয়ামস, ম্যালকম ওয়ালার, সিকান্দার রাজা, এলটন চিগুম্বুরা (অধিনায়ক), লিউক জংউই, গ্রায়েম ক্রিমার, তেন্দাই চিসোরো ও নেভিল মাদজিভা।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন