উদ্বোধনের অপেক্ষায় ফেঞ্চুগঞ্জের শাহজালাল সারকারখানা
২৩ জানুয়ারি ২০১৬, ০১:১৪
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম প্রকল্প নবনির্মিত শাহজালাল সারকারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে।
গত ১০ নভেম্বর থেকে বিশ্বের অন্যতম অত্যাধুনিক এই কারখানাটি উৎপাদনে যায়। ইতিমধ্যে প্রায় লক্ষাধিক মেট্রিকটন ইউরিয়া সার উৎপাদন হয়েছে। ওই সারকারখানাটি দৈনিক ১৭৬০ মেট্রিকটন সার উৎপাদন করার কথা থাকলেও ইতিমধ্যে ১৮শ’ মেট্রিকটন সার একদিনে উৎপাদন করে বিদ্যমান প্ল্যান্টগুলোর প্রযুক্তির সফলতা দেখিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানার পাশে দক্ষিণ পশ্চিম পাশের ১৬২ একর জায়গার উপর শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি স্থাপিত হয়েছে। সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে চীনের মেসার্স কমপ্লান্ট। আমেরিকা ও নেদারল্যান্ডসের প্রযুক্তিতে এই ফ্যাক্টরির ডিজাইন প্রতিষ্ঠান ছিল চায়নার মেসার্স চেংদা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।
দীর্ঘ দুই যুগ ধরে শাহজালাল সারকারখানার নির্মাণের দাবিতে সিলেটবাসী আন্দোলন-সংগ্রাম করলেও বিএনপি সরকার শাহজালাল সারকারখানা নির্মাণে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০১২ সালের ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যাধুনিক এই সারকারখানার নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ৪ বছরের কম সময়ের মধ্যেই সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বৃহৎ এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করায় আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী এজেন্ডার সফল বাস্তবায়নে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে।
সরেজমিনে শাহজালাল সারকারখানা পরিদর্শন করে দেখা গেছে কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর নান্দনিক ছোঁয়ায় শাহজালাল সারকারখানার সফলভাবে চালু হওয়া কম্পিউটারাইজড প্ল্যান্টগুলোর হচ্ছে- কমপ্লেক্স পাম্পিং স্টেশন, ফ্ল্যায়ার, পলিথিন ব্যাগ প্লান্ট, ১৫ হাজার মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতার ইউরিয়া ব্যাগ্ড স্টোরেজ ইউনিট, ৭০ হাজার ৪শ’ মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতার ইউরিয়া বাল্ক স্টোরেজ ইউনিট, স্টিম ও পাওয়ার জেনারেশন ইউনিট, মেইন সাব-স্টেশন, অ্যামোনিয়া সাব-স্টেশন, ল্যাবরেটরি বিল্ডিং, সেন্ট্রাল কন্ট্রোল বিল্ডিং, মেন্টেনেন্স শপ, অ্যামোনিয়া বোটলিং স্টেশন, অ্যামোনিয়া স্টোরেজ ভেসেল, অ্যামোনিয়া ইউনিট, ইউরিয়া ইউনিট, নাইট্রোজেন সাপ্লাই ইউনিট, ডেমি ওয়াটার ইউনিট, কুলিং ওয়াটার ইউনিট, অ্যামোনিয়া স্টোরেজ ট্যাংক (১, ২)।
সারকারখানার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়- আপাতত শাহজালাল সারকারখানা চালু হলেও মূল গ্যাস পাইপ লাইন কমার্শিয়াল মিটারিং সিস্টেম (সিএমএস) ও মাইজগাঁও রেলস্টেশন থেকে সারকারখানা পর্যন্ত রেললাইন পুনঃস্থাপনের কাজ শুরু হয়নি। বিয়য় দু’টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান মো. ইকবাল জানান- ফেঞ্চুগঞ্জে নবনির্মিত শাহজালাল সারকারখানা হবে এই উপমহাদেশের একটি বিখ্যাত শিল্পপ্রতিষ্ঠান। কারাখানাকে সেই মানের পর্যায়ে নেয়ার লক্ষ্যে তাতে বিশ্বের আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে।
ওই সারকারখানার জন্য ৮৬৫ জন লোকবল নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। পুরোপুরি উৎপাদনে গেলে শাহজালালের সার দেশের কৃষিখ্যাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের পাশাপাশি সার আমদানি হ্রাসেও ভূমিকা পালন করবে।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন