সীমান্ত হাটের সংখ্যা বাড়াতে চাইছে ত্রিপুরা
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ২১:৩৫
০৩, ২০১৬: ত্রিপুরায় সীমান্তহাটের সংখ্যা বাড়াতে চাইছে ভারত। আর এটি হলে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও উন্নত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। দাবি উঠেছে বর্তমানে থাকা দুটির বদলে জেলায় জেলায় গড়ে উঠুক সীমান্তহাট।
২০১৫ সালে ১৩ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শ্রীনগর এবং বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ছাগলনাইয়ার মাঝে চালু হয় সীমান্তহাট। পরবর্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের সময় ৬ জুন চালু হয় ত্রিপুরার সিপাহিজলার কমলাসাগর এবং বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তারাপুর সীমান্তহাটের।
ত্রিপুরা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক স্বপ্না দেবনাথ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমাঘাট এবং ত্রিপুরাই ধলাই জেলার কমলপুর মহকুমার মরাছড়ায় সীমান্তহাট নির্মাণের বিষয়ে বাংলাদেশের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান একইভাবে উত্তর ত্রিপুরা জেলার রাগনার পালবস্তি এবং বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার জুরি উপজেলার পশ্চিম বাটুলিতেও সীমান্তহাট নির্মাণ বিবেচনাধীন রয়েছে।
এই দুই হাট নির্মাণে চূড়ান্ত প্রকল্প প্রতিবেদন বা ডিপিআর-ও প্রস্তুত জানিয়ে স্বপ্না দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, এই দুটি প্রস্তাবিত হাটের জন্য ২কোটি ৮৮ লাখ এবং ২ কোটি ৯২ লাখ রুপির প্রকল্প ভারত সরকারের অনুমোদনের জন্য তাঁদের দপ্তর থেকে পাঠানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শুধু হাটের সংখ্যা বৃদ্ধিই নয়, হাটে ক্রেতারা যাতে ২০০ ডলার পর্যন্ত কেনাকাটা করতে পারেন এমন প্রস্তাবও এসেছে হাট কমিটির বৈঠকে। সেই সঙ্গে দাবি উঠছে দোকানদারের সংখ্যা বাড়ানোরও।
এই প্রসঙ্গে ত্রিপুরার প্রাক্তন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী তথা রাজ্য বিধানসভার বর্তমান উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সীমান্ত হাটের বিপুল সাফল্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে উভয় দেশের মানুষের স্বার্থেই অবিলম্বে যাবতীয় বিধিনিষেধ শিথিল করে হাটের দরজা খুলে দেওয়া উচিত। সেই সঙ্গে তিনি সীমান্তে প্রহরারত বিএসএফ জওয়ানদেরও আরও মানবিক হওয়ার পরামর্শ দেন। তাঁর দাবি, প্রতিটি জেলাতেই সীমান্তহাট গড়ে তুলতে হবে।
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার শাখাওয়াত হোসেনও মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আরও বেশি করে সীমান্তহাট হলে উভয় দেশেরই ভালো হবে। মানুষের মেলামেশাও বাড়বে। সেই সঙ্গে হাটে বিভিন্ন সামগ্রীর ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞাও শিথিল করার পক্ষে তিনি।
এ প্রসঙ্গে ত্রিপুরার শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী তপন চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাজ্য সরকার মনে করে সীমান্তহাট দারুণ সফল। তাই পরিকাঠামোর আরও উন্নতি করে সময়ের প্রয়োজনেই আরও বেশি করে উভয় পারের মানুষকে তাঁদের উৎপাদিত সামগ্রী বিকিকিনির সুযোগ দিতে হবে। প্রস্তাবিত নতুন সীমান্তহাট দুটিও দ্রুত চালু করার পাশাপাশি সবদিক পর্যালোচনা করে হাট একদিনের বদলে দু-দিনের করা যায় কি না, সেটাও বিবেচনা করার দাবি তুলেছেন তিনি। তাঁর মতে, সীমান্তহাটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে উভয় পারের মানুষের আবেগ। মেলামেশার এই মঞ্চ প্রকৃত অর্থেই হয়ে উঠেছে মিলনমেলা। তাই সেই আবেগকে সম্মান জানাতেই এগিয়ে আসতে হবে দুই দেশকে। এর ফলে আরও উন্নত হবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন