মোগলাবাজারে পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ঘুষিতে যুবক নিহত
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১১:১৮
দক্ষিণ সুরমা প্রতিনিধি ঃ দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজারে টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের কিলঘুষিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত যুবক মোগলাবাজার ইউনিয়নের রাঘবপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আরজমন্দ আলীর পুত্র আব্দুস সাত্তার (৩০)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা সূত্রে জানা যায়, গত রোববার রাত ৯টায় মোগলাবজারে চা দোকানে একই ইউনিয়নের হরগৌরি পশ্চিম পাড়ার মনতাই আলীর ছেলে এনামুল হকের সাথে মাটি কাটার পাওনা টাকা নিয়ে আব্দুস সাত্তার ও এনামুল হকের মধ্যে গালিগালাজ ও বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে এনামুল হক সাত্তারের উপর চড়াও এবং কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এ সময় আব্দুস সাত্তারের নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আশপাশের লোকজন আব্দুস সাত্তারকে আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। ১৩ ঘন্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় আব্দুস সাত্তার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। গতকাল ময়না তদন্ত শেষে আব্দুস সাত্তারের লাশ রাঘবপুর তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হলে তার মা ভাইবোন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ছেলের মৃত্যুতে মা আনোয়ারা বেগম বার বার মুর্ছা যাচ্ছে। আব্দুস সাত্তারের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ তার লাশ দেখতে বাড়িতে ভীড় জমায়।
সূত্র জানায় এনামুল হক আব্দুস সাত্তার সহ ৫/৬ জন লোক প্রতি বছর শীত মৌসুমে বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমি থেকে মাটি ক্রয় করে ট্রাক ও টাক্টর যোগে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করত। এবারও তারা বিভিন্ন স্থানে ট্রাক-ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ভরাট কাজের ঠিকাদারী করে আসছিলো। ঘটনার দিন আব্দুস সাত্তার ও এনামুল হকের মধ্যে টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। রোববার রাত ৯টায় বিষয়টি নিয়ে এনামুল হক ও ৫/৬ ঠিকাদার গংরা আব্দুস সাত্তারকে নিয়ে সপনের চার দোকানে বৈঠকে বসে। এ সময় এনামুল হক ও সাত্তারের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এনামুল হক আব্দুস সাত্তারের উপর হামলা চালায়। এতে আব্দুস সাত্তার আহত হন এবং হাসপাতালে যাওয়ার পথে মোগলাবাজার থানা পুলিশের কাছে হত্যাকারীদের নাম প্রকাশ করে যান। ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় মোগলাবাজারে আব্দুস সাত্তারকে নামাযে জানাযা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাযায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী সহ সর্বস্তরের মানুষ জানাযায় শরিক হন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায় আব্দুস সাত্তার জাতীয় যুব সংহতি থানা কমিটির সদস্য এবং মোগলাবাজার ইউনিয়ন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। নিহত আব্দুস সাত্তারের ভাই অভিযোগ করেন এনামুল হক সহ আরো ৫/৬ জন লোক চক্রান্ত করে তার ভাইকে হত্যা করেছে। তিনি তার ভাই হত্যার বিচার দাবী করেন।
মোগলাবাজার থানার এসি মোঃ ইকবার হোসাইন, ওসি খায়রুল ফজল গতকাল সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল ও আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে যান। এ ব্যাপারে মোগলাবাজারে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সাথে জড়িতে কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।