প্রচ্ছদ

হৃৎপিণ্ড ভালো আছে তো?

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৮:২০

ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার

download১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: আজ আমি ব্যাকুল হয়ে হৃদয়ের কথা বলতে চাই। কারণ, আমি চাই আমার প্রিয়তমার হৃদয়, আমার প্রিয় মায়ের হৃদয় আর পরিচিত সব মানুষের হৃদয়, অর্থাৎ হৃৎপিণ্ড যেন সুস্থ থাকে। এ জন্য হতে হবে সচেতন। ‘কিসের মধ্যে কী—ভালোবাসা দিবসে এসব কী আবোলতাবোল’ এমন বলতে পারেন অনেকেই। কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখুন তো ব্যাপারটা, যে মানুষকে আমরা এত ভালোবাসি, হৃদয় মানে হৃৎপিণ্ডের কোনো অসুখের কারণে তাকে যদি হারিয়ে ফেলি, তবে আমাদের জীবনটাই তো শূন্য হয়ে যাবে। তাই হৃৎপিণ্ডের, অর্থাৎ হার্টের যত্ন নেওয়া জরুরি।

অনেকে মনে করেন, তাঁদের শরীর ক্ষীণকায় বলে কখনো হৃদরোগ হবে না। এ জন্য তাঁরা খাওয়া-দাওয়ায়ও কোনো নিয়ন্ত্রণ করেন না। কিন্তু এরা বাইরে সরু দেহের অধিকারী হলেও এঁদের রক্তনালিতে চর্বি জমে সমূহ বিপদ ঘটতে পারে। তাই দেহের ওজন নির্বিশেষে ৪৫ বছরের ওপরের সব পুরুষ এবং ৫৫ বছরের ওপরের নারীদের হৃদরোগের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

তবে এ কথা ঠিক, খুব বেশি মেদবহুল মানুষের একটু বাড়তি সতর্ক থাকা প্রয়োজন। হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে হলে প্রচুর শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশজাতীয় খাবার খেতে হবে। বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছে যে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়, তাও হৃৎপিণ্ডের জন্য ভালো। হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী খাবারগুলো গোগ্রাসে না খেয়ে ধীরে ধীরে খাওয়াই কাম্য।

হৃৎপিণ্ডের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর হলো চর্বি। চর্বিরও আবার ধরন আছে—সম্পৃক্ত আর অসম্পৃক্ত চর্বি। সম্পৃক্ত চর্বি বেশি ক্ষতিকর। এরা রক্তনালির ভেতরের দেয়ালকে পুরু করে দেয়। এতে রক্তনালি হয় সংকুচিত। আবার ক্ষুদ্র রক্তনালিগুলো বন্ধও হয়ে যেতে পারে। ফলে হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ঘি, ননিযুক্ত দুধ, মাখন, পাম তেল, নারকেল তেল, হাই ক্যালরি পনির বর্জন করা উচিত। হৃদয় সচল রাখতে ভাজাভুজি পরিহার করে ভাঁপে সেদ্ধ, গ্রিল করা খাবার খেতে পারেন। কোমলপানীয়ও কিন্তু হার্টের বন্ধু নয়। কোল্ড ড্রিংকসের পরিবর্তে ডাবের পানি বা টাটকা ফলের জুস খেতে পারেন।

আবার হৃদরোগ প্রতিরোধে শুধু খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করলেই হবে না। শরীরে জমানো মেদ যেন কমে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিয়মিত ব্যায়াম করা। হৃৎপিণ্ডের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর হলো ধূমপান। সিগারেটের বিষাক্ত পদার্থ হার্টের যথেষ্ট ক্ষতি করে। নুনের অনেক গুণ গাইলেও হৃৎপিণ্ডের জন্য এটি পরম শত্রু। তাই হৃদরোগ এড়াতে কম লবণ খান, বাড়তি লবণ তো একেবারে নিষেধ।

প্রতিবছর হৃদরোগের কারণে এক কোটি ৭৫ লাখ মানুষ মারা যায়। এভাবে চলতে থাকলে ২০১৭ সালে তা দুই কোটিতে দাঁড়াবে। এই মৃত্যুর মিছিল থামাতে সচেতন হওয়ার সময় এখনই। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে আমাদের নিজেদের এবং আশপাশের মানুষকে এই প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচাতে।

লেখক :ডা. আবু সাঈদ শিমুল  রেজিস্ট্রার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
0Shares

সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম

ফেসবুকে ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার