সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে শেখ হাসিনা শক্তিশালী নেতা
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৯:৩৭
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি আশা করছে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ তার জোরালো অঙ্গীকার অব্যাহত রাখবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট এ কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটিতে দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা (ডিএনআই) পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সমালোচনা করার পরদিনই বার্নিকাট উল্টো প্রশংসা করলেন।
জেমস ক্ল্যাপার গত বুধবার বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধীদের দুর্বল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত চেষ্টা সম্ভবত দেশটিতে আন্তদেশীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতি বিস্তারের সূচনা ঘটাবে।’ প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন-বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম সেদিনই বিবিসি বাংলার কাছে এ বক্তব্যের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ শক্তিশালী অংশীদার হিসেবেই আছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই অত্যন্ত শক্তিশালী এক নেতা।’
জেমস ক্ল্যাপারের প্রতিবেদনের বিষয়ে বার্নিকাট বলেন, তাঁর সংস্থা সারা বিশ্ব থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ শেষে তা পর্যালোচনা করে কংগ্রেসে প্রতিবছর প্রতিবেদন পেশ করে। তিনি বলেন, ওই প্রতিবেদনে যা বলা হয়নি, তা হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একজন গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী। যখন থেকে তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন, তখন থেকেই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘ছাড় না দেওয়ার নীতি’ (জিরো টলারেন্স) গ্রহণ করেছেন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র শক্তিশালী হাতিয়ার। গণতন্ত্রের অনুপস্থিতির কারণে সন্ত্রাসীরা তাদের দলে নতুন লোক ভেড়াতে পারে। বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট গণতান্ত্রিক একটি সমাজে ভারসাম্য রক্ষার ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আলোচনার মাধ্যমে আমরা সমাজের সব সদস্যের অন্তর্ভুক্তি ও তাদের উদ্বেগ জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারি।’
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, তাঁরা অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ বিশেষ করে গত কয়েক মাসে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি ও উদ্বেগ প্রকাশে জনগণের সামর্থ্য দেখতে পাচ্ছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জোরালো অঙ্গীকার দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, এটি অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত জোরালো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। এই জোরালো সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।’
এর আগে লিখিত বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত জোরালো সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে যে গোষ্ঠীগুলো হামলার লক্ষ্য করছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও বিশ্বের সর্বত্রই হামলার লক্ষ্য করছে।’
বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ইতিহাস এবং সহিষ্ণুতা ও সংযমের ঐতিহ্য আছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধ হলো শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম পালনের সুযোগ।
বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশে সম্প্রতি শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক মত প্রকাশের সুযোগ দেখে তাঁরা উৎসাহিত হয়েছেন। যারা সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার পথ বেছে নিতে চায় তাদের ঠেকাতে নাগরিক সমাজসহ শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ও গঠনমূলক রাজনৈতিক আলোচনা সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড় অংশীদারির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ।