নকল রোধের স্বার্থে নগ্ন হয়ে পরীক্ষায় বসলেন এক হাজারেরও বেশী চাকরি প্রার্থী
০১ মার্চ ২০১৬, ১৯:২৮
মুজাফফরপুরের সেনা ভর্তি পরীক্ষা
ভারতের সেনাবাহিনীতে চাকরি পাওয়ার জন্য অর্ধনগ্ন হয়ে, শুধুমাত্র অন্তর্বাস পড়ে পরীক্ষায় বসতে বাধ্য হয়েছেন এক হাজারেরও বেশী চাকরি প্রার্থী।
বিহার রাজ্যের মুজাফ্ফরপুরে ঐ ভর্তি-পরীক্ষাটি হয় গত রোববার। খবরটি ছবি-সহ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
মঙ্গলবার পাটনা হাইকোর্ট এ বিষয়ে সেনা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে।
সাধারণ সৈনিক এবং টেকনিকাল বিভাগে নিয়োগের জন্য ঐ লিখিত পরীক্ষা নিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অধীন আর্মি রিক্রুটমেন্ট অফিস বা এআরও-মুজাফ্ফরপুর।
সাধারণত সেনাবাহিনীতে নিয়োগের আগে শারীরিক পরীক্ষার সময়ে অন্তর্বাস পড়ে আর ডাক্তারি পরীক্ষার সময়ে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে চিকিৎসকদের সামনে হাজির হতে হয়।
কিন্তু লিখিত পরীক্ষার সময়ে শুধুমাত্র অন্তর্বাস পরার কোনও নিয়ম নেই, সেটা বিবিসি বাংলার কাছে স্বীকার করেছেন সেনাবাহিনীর একাধিক অফিসার।
সেদিন মাঠের মধ্যে যে লাইন দিয়ে প্রায় উলঙ্গ হয়ে বসে কাগজ কলম নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন বহু যুবক, আর সেনাবাহিনীর পোশাক পড়ে বেশ কয়েকজন তা তদারক করছেন, সেই ছবিও বিবিসি-র হাতে এসেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি একজন পরীক্ষার্থীকে উদ্ধৃত করেছে, যেখানে তিনি জানিয়েছেন, “মুজাফ্ফরপুরের চক্কর ময়দানে ঢোকার সময়েই বলে দেওয়া হয় সব পোশাক খুলে ফেলতে, শুধুমাত্র অন্তর্বাস পড়ে ভেতরে যেতে বলা হয়। খুবই অস্বস্তি লাগছিল, কিন্তু কিছু করার ছিল না।“
আরেকজন পরীক্ষার্থী ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, “এত পরীক্ষার্থীর জন্য যে কোনও হলঘরের ব্যবস্থা করা সম্ভব না, সেটা জানি। কিন্তু সব পোশাক খুলে শুধু অন্তর্বাস পড়ে পরীক্ষা দেওয়াটা খুবই লজ্জাজনক।“
স্থানীয় সেনা সূত্রগুলি সংবাদ মাধ্যমকে অবশ্য বলছে যে পরীক্ষার সময়ে যাতে নকল না করতে পারে কেউ, সেজন্য খুব ভালভাবে দেহতল্লাসী করা হয়।
অনেকটা ফাঁক দিয়ে একেকজন পরীক্ষার্থীকে বসানো হয়।
তবে দেহতল্লাসীর সময় বাঁচানোর জন্য এদিন সব পোশাকই খুলে ফেলতে বলা হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের।
বিহার রাজ্যে পরীক্ষার হলে নকল করা মারাত্মকভাবে প্রচলিত।
গত বছরই সারা দেশের সংবাদমাধ্যমে ছবি বা ভিডিও প্রকাশিত হয়েছিল যেখানে দেখা গিয়েছিল যে ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষার সময়ে তিনতলা বা চারতলা স্কুল বাড়িতে মই বেয়ে বা জলের পাইপ বেয়ে ছাত্রছাত্রীদের নকল সরবরাহ করা হচ্ছে।
অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকরাই নকল ছেলে মেয়ের হাতে পৌঁছিয়ে দিচ্ছেন, এই ছবিও দেখা গিয়েছে।
তার ফলে জেলা পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্টরা নিজেরা বাহিনী নিয়ে বিশেষ টহলদারি শুরু করতে হয়েছিল বাধ্য হন।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন