প্রচ্ছদ

৮ মাসে রপ্তানি আয়ে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

১০ মার্চ ২০১৬, ১৪:০৩

ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার

workersতৈরি পোশাকের উপর ভর করে বাড়ছে রপ্তানি আয়; সর্বশেষ এক মাসে প্রবৃদ্ধির এই হার ছিল ১৪ শতাংশ।
এর আগে জানুয়ারিতে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি এসেছিল ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ।

অবশ্য অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এই আয় বৃদ্ধির হার প্রায় ৯ শতাংশ। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের আশা অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রোববার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ২ হাজার ২১২ কোটি ৩৭ লাখ (২২.১২ বিলিয়ন) ডলার আয় হয়েছে।

এরমধ্যে ১ হাজার ৮১২ কোটি ৭০ লাখ (১৮.১২ বিলিয়ন) ডলারই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। অর্থাৎ মোট রপ্তানির ৮২ শতাংশই এসেছে এই খাত থেকে।

এই সময়ে রপ্তানির মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১৬১ কোটি ৫০ লাখ (২১.৬১ বিলিয়ন) ডলার।

গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এই আট মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশের আয় ছিল ২ হাজার ৩১ কোটি ১৭ লাখ (২০ দশমিক ৩১ বিলিয়ন) ডলার।

এ হিসাবে জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি আয় এসেছে।

মাসিক হিসেবে ফেব্রুয়ারি মাসে ২৮৫ কোটি ৪২ লাখ ডলার রপ্তানি আয় দেশে এসেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যার পমিাণ ছিল ২৫১ কোটি ২৪ লাখ ডলার।

ফেব্রুয়ারিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ২৭২ কোটি ১০ লাখ ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই মাসে প্রায় ৫ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুলাই-ফেব্রুয়ারিতে মোট আয়ের মধ্যে এক হাজার ৮১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার এসেছে তৈরি পোশাক থেকে।

যারমধ্যে ৯৪৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার এসেছে উভেন পোশাক রপ্তানি থেকে। আর নিট ৮৬৪ কোটি ৩৪ লাখ ডলার এসেছে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে।

এ সময়ে নিট পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৬ দশমিক ২১ শতাংশ। উভেনে বেড়েছে ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। নিটে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১ শতাংশ এবং উভেনে ৪ দশমিক ২১ শতাংশ।

‌‘রপ্তানি আয়ের এই প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত রেখেছে’ মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‍অর্থবছরের বাকি মাসগুলোতে এই বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে।‍‍

“রপ্তানিকারক এব‌ং সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হচ্ছে। নগদ আর্থিক সহায়তাসহ সরকার রপ্তানি বাড়াতে নানা প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। রপ্তানিকারকরা নতুন নতুন বাজারে পণ্য রপ্তানি করছে।

“আমরা কম দামে যে মানের পোশাক রপ্তানি করি পৃথিবীর কোন দেশই তা পারবে না। সে কারণে ভবিষ্যতে আমাদের রপ্তানি আরও বাড়বে।”

দেশে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি রপ্তানি আয় বাড়াতে সহায়তা করেছে বলে মন্তব্য করেন মুহিত।

রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতি মাসেই রপ্তানি আয় বাড়ছে। অর্থবছরের বাকি চার মাসেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। এবার আমাদের পোশাক রপ্তানিতে ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হবে।”

“কোনো সহিংসতা নেই। আমদানি-রপ্তানিতে কোন সমস্যা হচ্ছে না। গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা অনেকটা দূর হয়েছে। আমাদের প্রধান রপ্তানি বাজার ইউরোপ-আমেরিকার অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়িয়েছে।”

সব মিলিয়ে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক ধারা ‘বইছে’ বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

“বর্তমান এই পরিবেশ অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে লক্ষ্য আমরা ঘোষণা করেছি তা অর্জন সম্ভব হবে।”

অন্য খাতের রপ্তান আয়

তৈরি পোশাক ছাড়া অন্য প্রায় সব খাতেই রপ্তানি আয় কমেছে। জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি কমেছে প্রায় ১৬ শতাংশ।

কৃষি পণ্যের মধ্যে চা রপ্তানি কমেছে ৪২ শতাংশ। শাকসবজি ৪০ শতাংশ, তামাক ২৪ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং ফল রপ্তানি ৩৩ শতাংশের বেশি কমেছে। চামড়া রপ্তানি কমেছে ৩০ শতাংশের বেশি।

এছাড়া প্লাস্টিক কমেছে ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

তবে ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। জাহাজ এবং এর অন্যান্য সরঞ্জাম রপ্তানি বেড়েছে ১১৮ শতাংশের বেশি।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার। এবার তা ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।

সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
0Shares

সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম

ফেসবুকে ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার