বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, আরও বাড়বে তাপদাহ
২৫ এপ্রিল ২০১৬, ১২:০০
ষড়ঋতুর দেশে বাংলা বছরের শুরুতে কাঠফাটা রোদের সাথে তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে প্রায় গোটা বাংলাদেশ। মানুষের সাথে অন্যান্য প্রাণিকুলেরও হাসফাঁস অবস্থা। এই তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এপ্রিল মাসজুড়েই থাকবে তাপপ্রবাহ। আর বৃষ্টির দেখা মিলছে না সহসাই। তবে এ মাসের শেষের দিকে কিছুটা কমতে পারে তাপমাত্রা। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, আগামীতে তাপমাত্রা আরো বাড়বে। বুধবার নাগাদ ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে যেতে পারে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আগামী শুক্রবার তা ৪৫ ডিগ্রির ঘরেই থাকার সম্ভাবনা বেশি।
ঢাকা বিভাগের ঢাকা, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জে তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এছাড়া রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে বিরাজ করছে তীব্র তাপপ্রবাহ। রবিবার যশোরে সর্বোচ্চ ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আর একই দিনে ঢাকায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা মৌসুমের সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন। এছাড়া ফরিদপুরের ৪০ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ৪০ ডিগ্রি, মংলায় ৪০.৫ ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ৪০.৫ ডিগ্রি, চুয়াডাঙ্গায় ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
আগামী তিন থেকে চার দিন তীব্র তাপপ্রবাহ বিদ্যমান থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চট্টগ্রাম বিভাগের মাইজদী কোর্ট ও শ্রীমঙ্গলে তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে রাজধানী ঢাকাতেও জনজীবনে প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। প্রচণ্ড গরম আর যানজটে অস্থির নগরবাসী। সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রামে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে ঢাকায় কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
প্রখর রোদে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বেরোনো এবং প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলে আসা তাপদাহে এর আগে গত ১২ এপ্রিল ঢাকায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আর রেকর্ড তাপমাত্রার ইতিহাসে ১৯৬০ সালে ৩০ এপ্রিল ঢাকায় ৪২.৩ ডিগ্রি এবং ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল রেকর্ড করা হয় ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। গত ২৩ এপ্রিল ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৪ ডিগ্রি ও রাজশাহীতে ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের ইতিহাসে ১৯৭২ সালে ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ৪৫.১ ডিগ্রি এবং ১৯৬৪ সালে এপ্রিল মাসে যশোরে তাপমাত্রা রেকর্ড ছিল ৪৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস বলছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আর এ মৌসুমের লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপের প্রবাবে সাধারণত বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গের লঘুচাপের প্রভাব বেশি হওয়ায় বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপের ফলে বাতাস বয়ে গেলেও বৃষ্টিপাত হচ্ছে না, আর পশ্চিমা লঘুচাপের সাথে সংমিশ্রণের ফলে এই তাপপ্রবাহ। আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বলেন, বিদ্যমান তাপপ্রবাহ কয়েক দিন পর কমলেও এ মৌসুম জুড়েই তাপমাত্রা বেশি থাকবে।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন