বিদ্যুৎহীন গ্রামে ঘরে ঘরে ফ্রিজ-টিভি
২৪ মে ২০১৬, ১৪:২৪
আজব দুই গ্রাম। প্রায় সব বাড়িতেই টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, মিক্সারসহ নানা রকম বৈদ্যুতিক যন্ত্র। কিন্তু এসব চালানোর জন্য কোনো বিদ্যুৎ নেই। কখনো বিদ্যুৎ ছিলও না। তাহলে এসব যন্ত্র কেনা হলো কেন? আসলে এগুলো কেনা হয়নি। ভোটের আবেদনের সঙ্গে (ভেট) উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে এসব।
ভারতের তামিল নাডু রাজ্যের কোয়াম্বাটুর জেলায় প্রায় ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত আজব দুই গ্রাম সেম্বুক্কারাই ও থুমানুরে। দুটি গ্রাম মিলিয়ে প্রায় ১৫০ পরিবারের বাস। প্রতিবার ভোটের আগে দুটি গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িতে জমা হতে থাকে বৈদ্যুতিক সামগ্রী। এসব পাঠিয়ে নিজেদের ভোটব্যাংক নিশ্চিত করেন নেতারা। কিন্তু মজার বিষয় হলো, সেই ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ঘরে তুলেও তা চালানোর উপায় নেই বাসিন্দাদের।
১৯৪৭ সালে ভারতে স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত সেম্বুক্কারাই ও থুমানুরে গ্রামে বিদ্যুৎ বাতি জ্বলেনি। নেই বিদ্যুতের কোনো রকম সুবিধা। প্রতিবছর ভোটের আগে গ্রাম দুটিতে রাজনৈতিক নেতারা ভোট পাওয়ার আশায় গ্রামবাসীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ভেট নিয়ে যান। আর সেই ভেটের তালিকায় থাকে টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিনের মতো ইলেনট্রনিকস নানা সমগ্রী। স্বাধীনতার পর থেকেই এই প্রত্যন্ত গ্রাম দুটিতে আজব এই ট্রাডিশন চলে আসছে। দুটি গ্রামের দেড় শতাধিক বাসিন্দার বেশির ভাগই দিনমজুর নয়তো কৃষক।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, তামিলনাড়ুর ডিএমকে কিংবা এআইএডিএমকে যে রাজনৈতিক দলের নেতারা হোন না কেন, ভোটের মুখে ভেট নিয়ে এসে গ্রামের বাসিন্দাদের সন্তষ্ট করে যান। নিশ্চিত করে যান তাঁদের ভোট ব্যাংক। ভেট পেয়ে তাঁরা ভোটটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নেতাদের দেন। কিন্তু আসল কাজের কিছুই হয় না। ভোট মিটলেই প্রত্যন্ত গ্রামে আর দেখা মেলে না নেতাদের। বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়িত হয়নি।
সেম্বুক্কারাই ও থুমানুরে গ্রামের ঘরে ঘরে ইলেকট্রনিকস পণ্যের পাহাড় জমেছে। বছরের পর বছর ধরে হা পিত্যেশ বাসিন্দাদের কবে বিদ্যুৎ যাবে। এর উত্তর জানা নেই গ্রামবাসীর।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন