কোহলিদের হারিয়ে আইপিএলের চ্যাম্পিয়ন মুস্তাফিজরা
৩০ মে ২০১৬, ০৯:৩৫
ধারাভাষ্যকার নভোজৎ সিং সিধু বলছিলেন, ‘গেইল যেদিন খেলেন দুনিয়ার সবাই সেদিন প্রজা, গেইল একাই রাজা।’সিধুর কথা যে অমূলক নয় সেটা প্রমাণও করে দিয়েছেন গেইল। যতক্ষণ তিনি ক্রিজে ছিলেন ততক্ষণে কেউই বো য় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জয়ের কথা ভাবতে পারেননি। তার আউট হওয়ার পর একটু করে আশা জাগাতে শুরু করে হায়দরাবাদ শিবির। শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চকর নবম আইপিএলের ফাইনাল ৮ রানে জিতে নিয়েছে ডেভিড ওয়ার্নার-মুস্তাফিজর রহমানের সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ২০০৯ সালে প্রবাসী (দক্ষিণ আফ্রিকা) আইপিএল প্রথম জিতেছিল হায়দরাবাদ। এবার বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার ট্রফি জিতলো দলটি। বেঙ্গালুরুকে এখন যদি কেউ বলেন, আইপিএলের চোকার্স, সেটা বললে বোধহয় বাড়িয়ে বলা হবে না। এবার নিয়ে তারা তিনবার ফাইনাল খেললো। কিন্তু একবারও ট্রফি জয়ের স্বাদ নিতে পারেনি।
আইপিএলে বড় দুর্ভাগা এক দলের নাম বেঙ্গালুরু। তারা ২০০৯ ও ২০১১ এর দুটি আইপিএলের ফাইনাল খেলার পরও চ্যাম্পিয়নের মালা গলায় পড়তে পারেনি। সভাবতই এবার বেঙ্গালুরু চেয়েছিলো পুরনো হিসাব চুকিয়ে নিতে! এখানে প্রতিশোধের ব্যাপারও থাকছে। ২০০৯ সালে বেঙ্গালুরুকে ফাইনালে ট্রফি বিসর্জন দিতে হয়েছিল এই হায়দরাবাদের কাছেই। তখন দলটির নাম ছিল ডেকান চার্জার্স হায়দরাবাদ। ২০১১ সালে বেঙ্গালুরুকে ফাইনালে কাঁদিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০০৯ আইপিএল বিজয়ের পর আর কখনো ফাইনালেই উঠতে পারেনি হায়দরাবাদ। এবার তাদেরও সামনে সুযোগ থাকছে দ্বিতীয়বার ট্রফি ঘরে তোলার। কিন্তু সেই সুবর্ণ সুযোগটা এবারও হাতছাড়া করে ফেললো তারা!
চলুন একটু ঘুরে আসি আইপিএলের নবম আসর শুরুর দিকে। রায়নার গুজরাট লায়ন্স, কোহলির বেঙ্গালুরু আর গম্ভীরের কলকাতাকে ফেভারিটের তকমা দিতে শুরু করল সবাই।
তখন কেউ অবশ্য সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে ফেভারিট ভাবেনি। কিন্তু গুটিকয়েক ব্যাটসম্যান আর দুর্ধর্ষ কয়েকজন বোলার।
তাই নিয়েই ফেভারিটদের গুড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে উঠল হায়দরাবাদ। শুধু ফাইনালে উঠেই ক্ষান্ত হয়নি তারা, সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বাদও দিয়েছে।
রোববার বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ডেভিড ওয়ার্নার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে পাহাড় সমান ২০৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে থামে বেঙ্গালুরু। ফলে ৮ রানের দারুণ এক জয়ে শিরোপা জিতে নেয় হায়দরাবাদ।
রোববার বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ডেভিড ওয়ার্নার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে পাহাড় সমান ২০৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে থামে বেঙ্গালুরু। ফলে ৮ রানের দারুণ এক জয়ে শিরোপা জিতে নেয় হায়দরাবাদ।
রোববার ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৬৩ রান সংগ্রহ করেন শিখর ধাওয়ান ও ডেভিড ওয়ার্নার। এরপর জুভেন্দ্র চাহালের বলে ক্রিস জর্দানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ধাওয়ান (২৮)। এরপর হেনরিকসকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় স্কোরকে ৯৭ রান পর্যন্ত টেনে নেন ওয়ার্নার। হেনরিকস আজ অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি। তিনি মাত্র ৪ রান করে আউট হন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে যুবরাজের সঙ্গে ২৮ রান তোলেন ওয়ার্নার। এরপর দলীয় ১২৫ রানে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক। যাওয়ার আগে ৩৮ বলে ৮চার ও ৩ ছক্কায় ৬৯ রানের ইনিংস খেলে যান। এরপর যুবরাজ সিংয়ের ৩৮, বেন কাটিংয়ের ১৫ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় করা অপরাজিত ৩৯ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২০৮ রান সংগ্রহ করে অরেঞ্জ আর্মিরা।
বল হাতে বেঙ্গালুরুর ক্রিস জর্দান ৩টি উইকেট নেন। শ্রীনাথ অরবিন্দ ২টি উইকেট নেন। একটি নেন চাহাল।
২০৯ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে খুনে মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেন ক্রিস গেইল। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন এবারের আইপিএলে রেকর্ড সংখ্যক রান করা কোহলি। তারা দুজন ৬৩ বলে তোলেন ১১৪ রান।
তখন জয়ের আশা এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছিল হায়রদরাবাদের সমর্থকরা। কিন্তু ৩৮ বলে ৪চার ও ৮ ছক্কায় ৭৬ রান করে গেইল ফিরে গেলে হায়দরাবাদের শিরোপা জয়ের কন্টকাকীর্ণ পথের একটি কাঁটা দূর হয়।
এরপর ডি ভিলিয়ার্স ও কোহলি মিলে দলীয় স্কোরকে টেনে নিতে থাকেন। দলীয় ১৪০ রানে কোহলিও সাজঘরে ফেরেন। আজও ৩৫ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন দুর্ষর্ধ এই ব্যাটসম্যান। তাকে আউট করার মধ্য দিয়ে আরো একটি কাঁটা তুলে নেয় হায়দরাবাদ।
কোহলি ফিরে যাওয়ার ৮ রানের মাথায় মাত্র ৫ রান করে ডি ভিলিয়ার্স ফিরে গেলে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে ওয়ার্নার বাহিনী। ডি ভিলিয়ার্স আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বেঙ্গালুরু।
এরপরও শেন ওয়াটসনের উপর ভরসা করছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু ১৬০ রানে লোকেশ রাহুল ও ১৬৪ রানে ওয়াটসন ফিরে গেলে হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় কোহলিদের।
শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে থামে বেঙ্গালুরুর ইনিংস।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন