ফেঞ্চুগঞ্জের কুশিয়ারা পাওয়ার কোম্পানীর বিদ্যুৎ কেন্দ্র জানুয়ারীতে উৎপাদনে যাচ্ছে
১৬ জুন ২০১৬, ০৪:১১
বেসরকারী উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সিলেটের নতুন আরেকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র আগামী জানুয়ারী মাসে উৎপাদনে যাচ্ছে। ফেঞ্চুগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর তীরে স্থাপিত নতুন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে আরো ১৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কুশিয়ারা পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড নামের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে চলছে প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ স্থাপনের কাজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ‘কম্বাইন্ড সাইকেল’ প্রযুক্তির গ্যাস ভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশী টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ১২ শ’ কোটি টাকা।
সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে কুশিয়ারা পাওয়ার কোম্পানীর এই কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০১৩ সালের ২০ মার্চ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও জালালাবাদ গ্যাসের সাথে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পরবর্তীতে প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য কুশিয়ারা পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানীর সাথে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ২০১৫ সালের ২০ মার্চ। এর প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও চীনের একাধিক প্রতিষ্ঠান এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে যান্ত্রিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে সম্মত হয়।
কুশিয়ারা পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেডের পক্ষে এ চুক্তিগুলো স্বাক্ষর করেন কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা চৌধুরী।
দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মোকাবেলায় বেসরকারী খাতের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদী তীরে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্জুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ একাংশ) আসনের এমপি আলহাজ্ব মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এর প্রেক্ষিতে ফেঞ্চুগঞ্জে সরকারী ভাবে প্রতিষ্ঠিত ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের পাশেই মাইজগাঁও ইউনিয়নের মইনপুর এলাকায় ৯ একর ভূমি ক্রয় করা হয়। বর্তমানে এই ৯ একর ভূমির উপর ‘কুশিয়ারা পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড-এর ১৭০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ইপিসি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ করছে।
কুশিয়ারা পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড সূত্র জানায়, আগামী জানুয়ারীতে প্রাথমিকভাবে ১শ’ ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে আরো ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এখান থেকে। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই যাবে জাতীয় গ্রীডে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী দেশে সে সময় বিদ্যুতের মোট সর্বোচ্চ চাহিদা প্রায় ৮ হাজার ৭ শ’ ৭১ মেগাওয়াট। ইতোমধ্যে মোট এই চাহিদার পুরোটাই জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে বর্তমান সরকার। ভারত থেকে আমদানী করা ৫ শ’ মেগাওয়াট ছাড়া পুরো বিদ্যুৎ-ই সরববরাহ হচ্ছে সরকারী ও বেসরকারী বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো থেকে। বর্তমানে আমদানীসহ দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট।
২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০ হাজার মেগাওয়াটে পৌছালে রাজধানীর হাতিরঝিলে ‘আলোক উৎসব’ আয়োজন করে সরকার।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন