সাত সরকার প্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী
১৪ জুলাই ২০১৬, ০০:৩৫
ঢাকা: মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটর যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১৫-১৬ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-ইউরোপ মিটিংয়ের (আসেম) ১১তম শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন তিনি।
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী সাইডলাইনে কয়েকটি দেশের সরকার প্রধান ও রাষ্ট্র প্রধানদের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। প্রায় প্রতিটি বৈঠকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমন ইস্যু বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে।
এছাড়া গুলশান ও শোলাকিয়ার জঙ্গি হামলা পরবর্তী বাংলাদেশের পরিস্থিতিও তাদের জানাবেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর এ সফর বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী জানান, ১৫ জুলাই উলানবাটরে সাংরি-লা হোটেলে আসেম’র ১১তম শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ ইউরোপ ও এশিয়ার ৩৩টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা, আসিয়ানের মহাসচিব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের সভাপতি ছাড়াও ১৭ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের প্লেনারি সেশনে অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেসব বৈঠকে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা ও বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর করার বিষয়ে আলোচনা হবে।
জানা যায়, আসেম শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে শেষ হাসিনা রাশিয়া, জাপান ও নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী, জার্মানির চ্যান্সেলর, মঙ্গোলিয়া ও মায়ানমারের রাষ্ট্রপতি, ভারতের উপ-রাষ্ট্রপ্রতি, ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও ইউরোপীয় কমিশন ও ইউরোপীয় কাউন্সিল প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি থেকে জানা যায়, মঙ্গোলিয়া পৌঁছালে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাবেন দেশটির রাষ্ট্রপতির চিফ অব স্টাফ পি সাগান। সম্মেলনের পাশাপাশি ১৫ জুলাই সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রী পাওলো গেনটিলোনি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
বেলা ১১টায় রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন শেখ হাসিনা। এরপর সাড়ে ১১টায় বসবেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সম্মেলনের ফাঁকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়ে একটি বিশেষ আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন। ওই আলোচনায় যৌথভাবে সভাপতিত্ব করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরপরই ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্মেলনের পর পৃথকভাবে সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি জোহান স্নেইডার আম্মানের সঙ্গে।
মঙ্গোলিয়ার রাষ্ট্রপতি সোখিয়া জিন এলবেক দর্জের দেওয়া নৈশভোজে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এদিনের কর্মসূচি শেষ হবে।
পরদিন নির্ধারিত রিট্রিটের পরে নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন শেখ হাসিনা। এরপরেই অনুষ্ঠিত হবে আসেমের সমাপনী অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠান শেষে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি এম হামিদ আনসারি। ওই দিন দুপুর ২টায় সাক্ষাৎ করবেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের প্রেসিডেন্টরা।
এদিন বিকেল সাড়ে চারটায় মায়ানমারের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করবেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার (১৬ জুলাই) রাত সোয়া ৮টার দিকে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আসেম সম্মেলনে এশিয়া ও ইউরোপের উন্নয়ন, সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযান, অভিবাসন সংকট মোকাবেলা, কানেকটিভিটিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় আলোচিত হবে। এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে আসেমের ভবিষ্যৎ কাজের পদ্ধতি নির্ধারণসহ জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা, দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ও ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হবে।
মাহমুদ আলী বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের রপ্তানির একক বৃহত্তমবাজার এবং অন্যতম প্রধান উন্নয়ন অংশীদার। আসেম প্লাটফরমকে ব্যবহার করে এশীয় দেশগুলোর সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে স্বার্থ সমুন্নত রাখার কাজটি করতে পারে।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন