প্রচ্ছদ

‘স্ট্রম-টোয়েন্টি সিক্স’ অভিযান ৯ জঙ্গি নিহত, সবাই উচ্চবিত্ত পরিবারের

২৬ জুলাই ২০১৬, ১৭:০০

ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার

imageরাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশ-র্যাব-ডিবি-সোয়াটের যৌথ অভিযানে ৯ জঙ্গি মারা গেছে।
 মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সকাল ৭টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মারুফ হাসান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 
এর আগে সকাল ৫টা ৫১ মিনিটে অভিযান শুরু হয়ে ৬টা ৫১ মিনিট পর্যন্ত চলে।
বিশেষায়িত টিম সোয়াত এই অভিযানে নেতৃত্ব দেয়। এসময় পুলিশ, র্যাব, ডিবি এবং ফায়ার সার্ভিসের রেসকিউ টিম সঙ্গে ছিলো।
 মারুফ হাসান আরও বলেন, হামলার আগে জঙ্গিরা ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দেয়। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে তারা কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলো। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
 ইতোমধ্যে ‘ক্রাইম সিন’ সংগ্রহ করতে সিআইডি দল ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে, জানান তিনি।
 এর আগে কল্যাণপুর ৫ নম্বর সড়কে ‘জাহাজ বিল্ডিং’ নামে পরিচিত ৭ তলা ভবনে জঙ্গি আস্তানা রয়েছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অভিযান চালায়। তিনতলা পর্যন্ত ওঠার পরে পাঁচতলা থেকে দুই যুবক নেমে এসে গুলি চালায়। এসময় এক পুলিশ কর্মকর্তার হাতে গুলি লাগে।
একই সঙ্গে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও পাল্টা গুলি চালালে হাসান নামে এক জঙ্গি আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
 ঢামেক সূত্র জানায়, আহত হাসান পুলিশকে জানায় ওই মেসে ৯ জন রয়েছে।
 রাত প্রায় সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের গুলি বিনিময় চলে। ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে পুলিশ, র্যাব, ডিবি যৌথ অভিযান শুরু করলে ফের শুরু হয় গুলি বিনিময়। এক ঘণ্টার অভিযানে ৯ জঙ্গি ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
 স্থানীয়রা জানান, ভবনটির নীচতলা থেকে ৪র্থ তলা পর্যন্ত ফ্যামিলি ভাড়া দেওয়া আছে। ৫ম থেকে সপ্তম তলায় চারটি করে ইউনিটে প্রত্যেকটিই মেস হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে
 কল্যাণপুরে বিশেষ অভিযানে নিহত ৯ জঙ্গির প্রায় সবাই অভিজাত পরিবারের সন্তান, গুলশান হামলাকারীদের সাথে ও এদের মিল রয়েছে। তারা ভয়াবহ এক নাশকতার পরিকল্পনা গুছিয়ে এনেছিল।
 মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। জঙ্গি আস্তানায় চালানো অভিযান ‘স্টর্ম-টোয়েন্টি সিক্স’ নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে অভিযান ও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার সামগ্রী নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপি কমিশনার। 
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে ১৩টি স্থানীয়ভাবে তৈরি গ্রেনেড জব্দ করা হয়। আরও জব্দ করা হয় ১৯টি ডেটোনেটর, ৭.৬২ বোর রাইফেল, কিছু ম্যাগজিন, তলোয়ার, ছুরি, হাতুড়ি, চাপাতি, আল্লাহু আকবর লেখা দু’টি কালো পতাকা, গুলি ও বিস্ফোরক।
তিনি বলেন, নিহত জঙ্গিদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এদের পরনে কালো, পাঞ্জাবি ও জিন্সের প্যান্ট ছিল। আর একজন ছাড়া সবার পায়েই কেডস ছিল। সবাই ছিল উচ্চশিক্ষিত। 
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “আমরা প্রথমে ভবনটি ঘিরে ফেলে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহবান জানাই কিন্তু তারা ‘নায়ারে তকবির আল্লাহু আকবর’ বলে আমাদের উপর হামলা চালাতে শুরু করে। পরে পাল্টা হামলা চালিয়ে ৯ জঙ্গিকে পর্যুদস্ত করি আর আহত অবস্থায় আটক করা হয় একজনকে।”
তিনি বলেন, আহত আটক জঙ্গি তার নাম হাসান বলে জানিয়ে বলেছে তার বাড়ি বগুড়া। কিন্তু এই নাম আসল কিনা সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হতে পারছিনা। তদন্ত করে দেখতে হবে নাম আসলে কি । হাসান নামধারী নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জনের নাম বলেছে- এমরান, তাপস, রবিন, অভি, আতিক, সোহান, ইকবাল, সাব্বির। তবে এই নামগুলো ছদ্মনাম হতে পারে।
 সোমবার(২৫ জুলাই) দিবাগত রাত থেকেই এই অভিযানের খবর পাওয়া যায় তবে পুলিশ জানিয়েছে মঙ্গলবার ভোরে এই অভিযান চালায় পুলিশ-র‍্যাব-ডিবি-সোয়াটের যৌথ দল। এতে নিহত হয় ৯ জঙ্গি । তারা সবাই জেএমবি সদস্য বলে জানায় পুলিশ। এসময় আটক করা হয় হাসান (২৫) নামের এক জঙ্গি সদস্যকে। তার বাড়ি বগুড়ার জীবন নগর। আটক এই জঙ্গিকে আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
0Shares

সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম

ফেসবুকে ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার