নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি পণ্য বহুমুখিকরণে ব্যবসায়ীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহবান
২৮ আগস্ট ২০১৬, ১৭:৪৭
ঢাকা, ২৮ আগস্ট ২০১৬ (বাসস): প্রধানমন্ত্রী দেশের রপ্তানী খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য ব্যবসায়ীদের নতুন বাজার খুঁজে বের করার পাশাপাশি পণ্য বহুমুখিকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা নতুন নতুন বাজার খুঁজে বেড়ান। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা সেটা বিশ্লেষণ করে বাজার খোঁজ করুন। বাজার নিজেদের খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সবরকমের সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু বাজার খোঁজার উদ্যোগটা আপনাদেরই নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে এসে ভাল লাগল, এখন অনেক নতুন নতুন পণ্য বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে। তবে, এর পরিমাণটা বাড়াতে হবে। কারণ পৃথিবীতে এখন বহু দেশ এবং মানুষের চাহিদাও দিন দিন পরিবর্তিত হচ্ছে। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা রয়েছে তা আপনাদের খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য পণ্যের বহুমুখিকরণও একান্তভাবে প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা বক্তৃতা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবেন। সরকার এখানে ব্যবসা করতে আসেনি। আমরা সব ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের সার্বিক অগ্রগতির মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার যেন দ্রুত উন্নতি হয় সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। এ সময় বিগত ৭ বছরে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যবসা ক্ষেত্রে তাঁর সরকার নগদ সহায়তা প্রদান করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা নতুন নতুন বাজার খুঁজে বেড়ান। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা সেটা বিশ্লেষণ করে বাজার খুঁজুন। বাজার নিজেদের খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সবরকমের সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু বাজার খোঁজার উদ্যোগটা আপনাদেরই নিতে হবে।’
তিনি বলেন, পৃথিবীতে এখন বহু দেশ এবং মানুষের চাহিদাও দিন দিন পরিবর্তিত হচ্ছে। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা রয়েছে তা আপনাদের খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য পণ্যের বহুমুখিকরণও একান্তভাবে প্রয়োজন।
সীমিত পণ্যের উপর দেশের রপ্তানি নির্ভরতা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের অন্যতম দুর্বলতা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি বাণিজ্যের এ সমস্যা দূর করার জন্য আমরা পণ্য তালিকায় নতুন নতুন পণ্যের সংযোজন এবং কম অবদান রাখছে এমন পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে ১০টির কাজ এগিয়ে চলছে।
সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় পণ্য ও বাজার বহুমুখী করার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অধিক মূল্য সংযোজিত পণ্য উৎপাদনে ও দেশজ কাঁচামাল নির্ভর রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে আপনাদের মনোনিবেশ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন বিশ্বের উন্নত দেশ এমনকি উন্নয়নশীল দেশে শ্রমশক্তির প্রকট অভাব। এজন্য আমরা শ্রমঘন শিল্প প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব প্রদান করেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনশক্তি অর্থনৈতিক সম্পদ। এদেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ ৪০ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী। বয়স্ক মানুষের সংখ্যাধিক্যতা এবং কর্মঠ মানুষের ঘাটতির কারণে শ্রমঘন শিল্পে বিশ্বের শক্তিশালী দেশসমূহ ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ যাতে সেই জায়গা পুরণ করতে পারে তার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের রপ্তানি খাতের শ্লোগান হচ্ছে ‘ফ্রম শার্ট টু শিপ,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে রফতানি বাণিজ্যের বিকাশে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা পর্যায়ে ১১৩টি প্রতিষ্ঠানের মাঝে জাতীয় রফতানি ট্রফি প্রদান করেন।
২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরের জন্য সর্বমোট ৫২টি স্বর্ণ, ৩৭টি রৌপ্য এবং ২৪টি ব্রোঞ্জ ট্রফি ও সনদ প্রদান করা হয়