বিআরটিসির জন্য ১১শ বাস-ট্রাক কেনা হচ্ছে
৩০ আগস্ট ২০১৬, ১৮:৪৩
ঢাকা, ৩০ আগস্ট, ২০১৬ (বাসস): রাজধানীতে উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) জন্য ৬০০ বাস ও ৫০০ ট্রাক কেনা হচ্ছে। এজন্য ভারতীয় ঋণ কর্মসূচির আওতায় দু’টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই দু’টি প্রকল্পসহ পাঁচ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
সভা শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি জানান, একনেকে মোট ২ হাজার ৮০৫ কোটি টাকার পাঁচ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ৯৩২ কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৮৭২ কোটি ৭২ লাখ টাকা যার পুরোটা ভারতীয় ঋণ কর্মসূচির আওতায় (এলওসি) পাওয়া যাবে।
সভায় বিআরটিসির জন্য বাস ও ট্রাক কেনার জন্য অনুমোদন পাওয়া দুই প্রকল্প প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিআরটিসির জন্য দ্বিতল, একতলা এসি ও ননএসি বাস কেনার জন্য ৫৮০ কোটি ৮৭ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের ৪৩৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ভারতীয় ঋণ (ইন্ডিয়ান লাইন অব ক্রেডিট) থেকে পাওয়া যাবে। বাকি ১৪৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে যোগান আসবে।
তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় ৩০০টি ডাবল ডেকার বাস, ১০০ সিঙ্গেল ডেকার এসি সিটি বাস, ১০০ সিঙ্গেল ডেকার এসি ইন্টারসিটি এবং ১০০টি সিঙ্গেল ডেকার ননএসি বাস কেনা হবে।
২১৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিআরটিসির ৫০০ ট্রাক কেনা প্রকল্প সম্পর্কে মুস্তফা কামাল বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ১৫ টন মালামাল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৩৫০ এবং ১০ টন মালামাল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ১৫০টি ট্রাক কেনা হবে। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ভারতীয় ঋণ ১৫৮ কোটি ৪০ লাখ এবং সরকারি তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ৫৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
তিনি জানান, বিআরটিসির যেসব বাস ও ট্রাক নষ্ট হয়ে গেছে, সেগুলো দ্রুত নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য একটি কমিটি গঠন করার কথাও বলেন তিনি।
এছাড়া বাংলাদেশ ডাক বিভাগের জন্য কাভার্ড ভ্যান হিসেবে কয়েকটি ট্রাক আমদানি করারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিআরটিসির জন্য যে বাসগুলো কেনা হবে- এগুলো রাজধানীবাসীর যাতায়াতের জন্য রাস্তায় চলাচল করবে। আর ট্রাকগুলো সরকারের বিভিন্ন দফতর বা সংস্থার কাজে ব্যবহৃত হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সফর নিয়ে একনেক বৈঠকে কোন আলোচনা হয়েছে কি-না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সফরকালে বাংলাদেশ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে জন কেরির আন্তরিক আগ্রহ সবার মন ছুঁয়ে গেছে। তার সফরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে বিআরটিসির বাস-ট্রাক কেনা ছাড়াও ভারতীয় ঋণের আরো একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এটি হলো-‘জামালপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জামালপুর নার্সিং কলেজ স্থাপন’, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ভারতীয় ঋণ রয়েছে ২৮০ কোটি টাকা। বাকি ৪৩৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে।
অনুমোদিত অন্য দু’টি প্রকল্প হলো- চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজা) বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সড়ক কাম বেড়িবাঁধ প্রতিরক্ষা এবং নিষ্কাশন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৬২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। পিবিআই-এর কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তদন্ত সহায়ক যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এই দুই প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থ সরকারি তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে।