আজ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জন্মদিন
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৪:৫৪
গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ১২৪ তম জন্মদিন আজ।
১৮৯২ সালের এই দিনে বর্তমান পশ্চিম বঙ্গের (ভারত) মেদিনীপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম সোহরাওয়ার্দীর। তার বাবা ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের খ্যাতনামা বিচারক স্যার জাহিদ সোহরাওয়ার্দী।
তার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতিক জীবনের উত্থান ঘটে। জনগণের প্রতি অকৃতিম ভালোবাসা ও গণতন্ত্রের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাই ছিল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবনের প্রধান রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য। দেশ ভাগের আগে ভারত ও পাকিস্তানের পাশাপাশি অখণ্ড স্বাধীন বাংলা নামে একটি ‘ডমিনিয়ন রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।
কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করার পর মায়ের অনুরোধে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ভাষা এবং সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন সোহরাওয়ার্দী।
১৯১৩ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্মান অর্জন করে সেখান থেকেই আইন বিষয়েও পড়াশোনা করেন এবং বিসিএল ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯১৮ সালে গ্রে’স ইন থেকে ‘বার অ্যাট ল’ অর্জন করেন তিনি। এরপর ১৯২১ সালে কলকাতায় ফিরে এসে আইন পেশায় নিয়োজিত হন।
১৯২৪ সালে চিত্তরঞ্জন দাসের স্বরাজ পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। এ বছরেই কলকাতা পৌরসভার ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন। ১৯২৭ সালে স্বরাজ পার্টি থেকে পদত্যাগ করে ১৯৩৬ সালের শুরুর দিতে তিনি ইন্ডিপেন্ডেন্ট মুসলিম পার্টি গঠন করেন।
১৯৪৩ সালে গঠিত খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রিসভায় তিনি অন্তর্ভূক্ত হন তিনি। সে বছরই দেশ জুড়ে দেখা দেয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। এসময় তিনি গ্রামে গ্রামে লঙ্গরখানা করার হুকুম দেন। দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভয়াবহ অবস্থার কথা জানিয়ে সাহায্য দিতে বললে।
১৯৪৭ সালের ৯ এপ্রিল অখণ্ড সার্বভৌম বাংলার প্রস্তাব করেন। তার ও আবুল হাশেমের নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ ‘মুসলিম’ শব্দটি বর্জন করে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
১৯৫৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৫৭ সালের ১১ অক্টোবর পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
১৯৫৮ সালে ইস্কান্দার মীর্জা পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করে ১৯৫৯ সালের আগস্ট থেকে তাকে পাকিস্তানের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পাকিস্তান নিরাপত্তা আইনে রাষ্ট্রবিরোধী মিথ্যা অপরাধ দেখিয়ে তাকে ১৯৬২ সালের গ্রেফতার করা হয় এবং করাচি সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয়। ১৯৬২ সালে তিনি মুক্তি পান।
ওই বছর তিনি আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের উদ্দেশ্যে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এন ডি এফ ) গঠন করেন।
১৯৬৩ সালে স্বাস্থ্যগত কারণে দেশের বাইরে যান। এসময় লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থান কালে ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর ৭১ বছর বয়সে মারা যান বাঙালির গর্ব বাংলার এই শ্রেষ্ঠ সন্তান।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন