আওয়ামী লীগের সম্মেলন জাঁকজমকপূর্ণ করতে চলছে প্রস্তুতি
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৩:২৬
ঢাকা, ২৭ সেপ্টম্বর ২০১৬ : ‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার। এখন সময় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার’ শীর্ষক স্লোগানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন।
দেশের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী এই রাজনৈতিক দলের সম্মেলন জাঁকজমকপূর্ণ, উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে করতে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সম্মেলন সফল করার লক্ষে গঠিত উপ-কমিটিগুলো নিয়মিত সভা করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে সকল প্রস্তুতি কার্যক্রম চলছে। সেজন্য ব্যস্ত ও উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে এ কার্যালয়।
আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবরের সম্মেলনে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্দ্যানকে সম্মেলনের ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশের জেলা-উপজেলা শহরে সাজ্জসজ্জা করা হবে। সম্মেলনের ভেন্যুকে দৃষ্টিনন্দন করতে গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে নানা সাজে সাজানো হবে।
সম্মেলনের মূল মঞ্চ হবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’ আকৃতির। মঞ্চের উচ্চতা হবে মাটি থেকে ২৫ ফুট। মঞ্চের পেছনে ৩৫ ফুট উচ্চতার এলইডি পর্দা থাকবে। মঞ্চের সামনের দিকে স্বচ্ছ কাচের খুঁটিবিহীন একটি গ্যালারি তৈরি করা হবে। যার আকার হবে ২৩০ ফুট বাই ১২৫ ফুট। সেখানে সাত হাজার অতিথির আসন থাকবে। ৪০ হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্যান্ডেল করা হবে।
সম্মেলনে সাড়ে ৬ সহস্রাধিক কাউন্সিলর, ২৭টি গণতান্ত্রিক দেশের দেড় শতাধিক রাজনীতিক, ৩০ হাজার ডেলিগেট এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। কাউন্সিলরদের তালিকা পাঠাতে গত সপ্তাহে প্রতিটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বরাবর কেন্দ্র থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উদ্বোধনী ভাষণ এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের রিপোর্ট পেশ করার পর বিদেশি অতিথিরা বক্তৃতা করতে পারেন। এ ধরনের প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।
উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ২৩ অক্টোবর সারাদেশ থেকে আসা কাউন্সিলরদের নিয়ে পার্শ্ববর্তী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হবে মূল কাউন্সিল অধিবেশন। গুরুত্বপূর্ণ এ অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে।
সম্মেলন উপলক্ষে ইতিমধ্যে দুই ধরনের পোস্টার ছাপানো হয়েছে। সম্মেলনের ডাক শিরোনামে পোস্টার শিগগিরই সারা দেশে পাঠানো হবে। সম্মেলনে ব্যবহার করা হবে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার। ১০ দিন আগে থেকেই আলোকসজ্জা করা হবে পুরো রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ প্রবেশপথ। ডিজিটাল ডিসপ্লেতে দেখানো হবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সব উন্নয়ন।
দিন-রাত ধরে বড় বড় এলইডি স্ক্রিনে দেখানো হবে দলটির ইতিহাস, ঐতিহ্য, অর্জন ও উন্নয়নের চিত্র। এরই মধ্যে সেসব ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মূলমঞ্চের সামনে বালি শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকান্ডের দৃশ্য।
এছাড়া এই দুই দিন ধরেই রাজধানীর প্রতিটি প্রবেশদ্বারে এবং সম্মেলন স্থলের চতুর্দিকে একাধিক মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ প্রবেশপথ গুলোতে দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে।
সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে জনতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং সম্মেলন প্রস্তুতি অর্থ উপ-কমিটির আহ্বায়ক কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, সম্মেলনের প্রস্তুতির কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বিভিন্ন উপ-কমিটি সভা করে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ওই সব খাতে কী পরিমাণ টাকা ব্যয় হবে তারও একটা খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আসার পর আমরা তার সঙ্গে আলোচনা করে সব কিছু চূড়ান্ত করবো।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, একটা জাঁকজমকপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্মেলন হবে। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আগামী দিনের জন্য আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হবে। সেভাবেই সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে।
সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির সদস্য সচিব মির্জা আজম বলেন, বালি শিল্পে ফুটিয়ে তোলা হবে ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডের দৃশ্য : সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘স্যান্ড আর্ট’-এর মাধ্যমে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডের চিত্র তুলে ধরা হবে। সেখানে থাকবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্ট কালরাতে হত্যাকান্ডের শিকার সবার প্রতিকৃতি।-বাসস