ই-মেইল তদন্তে এফবিআই’র সিদ্ধান্তের নিন্দা হিলারি শিবিরের
৩০ অক্টোবর ২০১৬, ১৩:০২
মায়ামি, ৩০ অক্টোবর ২০১৬ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত ইমেইল চালাচালির বিষয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে তার প্রচার শিবির।
এফবিআই পরিচালক জেমস কোমি শুক্রবার কংগ্রেসকে এক চিঠিতে বলেন, হিলারির আরো কিছু ই-মেইলের খোঁজ পাওয়ায় এফবিআই নতুন করে তা তদন্ত করবে।
তিনি বলেন, ই-মেইলগুলোর গুরুত্ব আদৌ ছিল কিনা বা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা তিনি এখনই বোঝা যাচ্ছে না। এর জন্য তদন্ত দরকার এবং তদন্ত সম্পন্ন করতে ঠিক কত সময় লাগবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
এরপর একটি নির্বাচনী প্রচারণায় হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, নির্বাচনের মাত্র কয়েক দিন আগে এফবিআইএর এই ঘোষণা নজিরবিহীন ও গভীর সংকটের।
তবে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এফবিআইয়ের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন।
এফবিআইএর পরিচালক বলেছেন, নতুন এই ইমেইলের বিষয়ে জানানোটা তিনি নৈতিকতা বোধ থেকে করেছেন । তিনি আরো বলেন, আমেরিকার জনগণকে তিনি ভুল পথে পরিচালিত করতে চান না।
শনিবার ফ্লোরিডাতে নির্বাচনী প্রচারণাকালে ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, এটা শুধু অদ্ভুত নয় নজিরবিহীনও বটে।
তিনি বলেন, এটা গভীর সংকটের কারণ ভোটাররা সবটুকু জানার অধিকার রাখে। তবে তার বিশ্বাস, নতুন তদন্তে আগের সিদ্ধান্তের কোন পরিবর্তন হবে না।
হিলারির সমর্থকরা এফবিআই পরিচালক কোমির তীব্র সমালোচনা করেছেন। নির্বাচনের এত কাছে এসে নতুন করে ই-মেইলের বিষয়টি জনগণের সামনে নিয়ে আসার জন্য বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদেরকেও সমালোচনা করা হয়েছে।
তবে এফবিআই পরিচালক কোমি বলেছেন, তারা সাধারণভাবে কংগ্রেসকে বিষয়টি অবহিত করেনি। তিনি আমেরিকার জনগণকে ভুল পথে পরিচালিত করতে চাননা।
এই পরিস্থিতিকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসের ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির পরেই হিলারির ইমেইলের বিষয়টি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি।
শনিবার কলোরাডোতে এক জনসভায় তিনি বলেন, হিলারির ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার ব্যবহার করাটা ইচ্ছাকৃত,উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
২০১৫ সালে প্রথম হিলারির ব্যক্তিগত ই-মেইল চালাচালির বিষয়টি ফাঁস হয়। এ সময় এফবিআই তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে গুরুতর কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিল। এ কারণে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংস্থাটি।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পর থেকেই এই বিষয়টিকে হিলারির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ বা অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছেন তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীরা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ঠিক এ সময়ে এই তথ্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
হিলারির নির্বাচন প্রচারণা শিবিরের চেয়ারম্যান জন পোডেস্টা এই সময়ে এফবিআইয়ের এমন কর্মকান্ডের সমালোচনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব বোস্টনের অধ্যাপক নাজলি কিবরিয়া বলছেন, এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করে ফলাফল জানা হয়তো সম্ভব হবে না। তবে এখনো ভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি, এমন কিছু ভোট হয়তো হিলারির হাতছাড়া হতে পারে।