বিয়ে দেয়া যাবে ১৮ বছরের আগেও
২৬ নভেম্বর ২০১৬, ০৮:২১
সরকার বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করছে জানালেও অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ের সুযোগ রেখে আইন করতে যাচ্ছে। তবে এই সুযোগ রাখা হচ্ছে কেবল বিশেষ প্রেক্ষাপটে।
এমন সুযোগ রাখা হচ্ছে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন- ২০১৬’ এর খসড়ায়। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই খড়সায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
এই খড়সায় বলা হয়েছে বিশেষ প্রেক্ষাপটে আদালতের নির্দেশনা এবং বাবা-মায়ের সমর্থনে অপ্রপাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে।
গত কয়েক বছর ধরেই এই আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সরকার মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ করতে চায়-বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশের পর নারী অধিকার বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ রাখার দাবি জানায়। সরকারও পরে নানা সময় জানায়, বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ই থাকছে।
আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও দেশে বাল্যবিয়ে বিরল নয়। বরং বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, বিশেষ করে গ্রাম এলাকায় মেয়েদের কিশোর বয়সে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা আছে। কম বয়সে বিয়ে হলে মেয়েদের সন্তানধারণ করতে গিয়ে নানা জটিলতা হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ক্ষেত্রে কেবল মা নয়, ঝুঁকিতে থাকে তার গর্ভের সন্তানও। আর অপ্রাপ্তবয়সে সন্তান ধারণের ফলে মায়ের মানসে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে যা তাকে তার সারা জীবন তাড়িয়ে বেড়ায় বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসাবিদরাও।
নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, মেয়েদের বিয়ের বয়স কমানো হলো বাল্যবিয়ে আরও উৎসাহ পাবে। আর এতে নারীর স্বাস্থ্য ও মানসপটে স্থায়ী প্রভাব পড়বে।
বাংলাদেশের আইনে ছেলেদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ২১ আর মেয়েদের ১৮। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম জানান, বিয়ের বয়স আগেরটাই বলবৎ থাকছে। তবে বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনো নারীর সর্বোত্তম স্বার্থে আদালতের নির্দেশনাক্রমে মাতা-পিতার সমর্থনে বিয়ে হলে এ আইনের অধীনে অপরাধ হবে না।
তবে বিশেষ প্রেক্ষাপটে কত বয়সে বিষয়ে দেওয়া যাবে- এ বিষয়ে আইনে কিছু বলা নেই বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি জানান, নতুন আইনে বাল্যবিয়ের শাস্তি ও জরিমানা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্ধারিত বয়সের আগে বিয়ে দিলে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ দুই বছর ও সর্বনিম্ন দুই মাস এবং সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন দশ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘জন্ম তারিখ প্রমাণের জন্য বর ও কনের জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার সনদ এবং পাসপোর্টে উল্লেখিত তারিখ গ্রহযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।