ম্যাচ শেষে যা বললেন মাশরাফি
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০০:৩৯
এশিয়া কাপের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৫১ রানে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশ। বোলিং বিভাগে দলের সবার প্রচেষ্টাতেই ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা। আর ব্যাটিং মোহাম্মদ মিথুন ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভূমিকা ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রিয়াদের প্রশংসা করেন মাশরাফি। এছাড়া মুস্তাফিজের বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
মাশরাফির সংবাদ সম্মেলনের চুম্বক অংশ বাংলা ট্রিবিউন পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:-
প্রশ্ন: রিয়াদ বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পারফরম্যান্স করেছেন; আজ তার পারফরম্যান্সে আপনার মূল্যায়ন কি?
মাশরাফি: রিয়াদ আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। সে ভালো করেই জানে তার কী করতে হবে। সবসময় চাপের মধ্যেই ব্যাটিং করতে হয় রিয়াদকে। আজও সে চাপের মধ্যেই নিজের সেরাটা দিয়েছে। জয়ের জন্য সম্ভাব্য যে রানটা দরকার ছিল সেটাও করে দিয়েছে রিয়াদ। সেই সঙ্গে বোলিংটা খুব ভালো হচ্ছে তার। আশা করি এটা বজায় থাকবে।
প্রশ্ন: শেষ ওভার কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল?
মাশরাফি: আমরা আসলে ওটাই টার্গেট করেছিলাম, জানি যে একটা অফস্পিনার আছে ওদের। ওই ওভারে ১০-১৫ রান করা গেলে লড়াই করার মতো পুঁজি পাওয়া যাবে। যা চেয়েছিলাম সেটাই হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে রিয়াদ উইকেটে ছিল বলে।
প্রশ্ন: উইকেটের মধ্যে পার্থক্য ছিলো কিনা?
মাশরাফি: গত ম্যাচের উইকেটে ঘাস একটু বেশি ছিলো। আজকে অতো ছিলো না। হয়তো হাইস্কোরি উইকেট না হলেও, ১৫০-১৬০ করা সম্ভব ছিলো। তবে এমন উইকেটে খেলা আমাদের জন্য খারাপ হচ্ছে না। বিশ্বকাপে আমাদের যে ম্যাচগুলো আছে, অনেকটা এমন উইকেট হতে পারে।
প্রশ্ন: সাকিব-রিয়াদ-মুশফিকের ব্যাটিং পজিশন কি নির্ধারিত?
মাশরাফি : প্রথম ম্যাচে আমাদের বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশন করার পরিকল্পনা ছিলো অশ্বিনকে কেন্দ্র করে। এ জন্য মুশফিক পাঁচে ব্যাটিং করেছে। সাধারণত মুশফিক চারে ব্যাটিং করবে, আজকে যেমন করেছে। সাকিব-রিয়াদেরটা স্বাভাবিক ভাবেই হচ্ছে।
প্রশ্ন : ধর্মশালার উইকেটের কথা বিবেচনা করেই কি এমন উইকেট খেলছেন আপনারা?
মাশরাফি : আমাদের ভারতে খেলার খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই। সাকিব আইপিএলের কল্যাণে কিছু ম্যাচ খেলেছে। ধর্মশালাতে একেবারেই কোনও অভিজ্ঞতা নেই। আমি বলছি না, এখানে ওই কারণে উইকেটটা তৈরি হয়েছে। আমি বলতে চাচ্ছি, ওখান এমন উইকেট হলে আমাদের জন্য অনুশীলনটা হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: দুই ম্যাচে এমন ব্যাটিং হওয়ার পর কতটা হতাশ?
মাশরাফি : হতাশ বলবো না। আমরা অবশ্যই এর চেয়ে ভালো করতে পারি। শেষ দুটি ম্যাচ বাদ দিলে আমরা আগের আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোতে ১৫০-১৬০ স্কোর ছিল। এখানে করতে না পারাটা আমাদের জন্য দূর্ভাগ্যের।
প্রশ্ন : ১৩৩ রান করার পর ড্রেসিং রুমে কী পরিকল্পনা হয়েছে?
মাশরাফি : ১৩০ প্লাস রান করার পর আমরা একটাই পরিকল্পনা করেছি, ওভার এক্সইটেড না হওয়া। নিজের সামর্থ্য থেকে বের হয়ে গিয়ে অন্য কিছু না করা। আমাদের স্বাভাবিক বোলিং করতে পারলেই হবে।
প্রশ্ন : তামিমের না থাকাটা কতটা হতাশার?
মাশরাফি : তামিমের কথা আমরা সবাই জানি। তামিমের ফ্যামিলি ইস্যু আছে। আমি মনে করি খেলার চেয়ে ওটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চেয়েছি ও পরিবারের সঙ্গে থাকুক।
প্রশ্ন: সাকিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যাটসম্যানকে পাঁচে খেলোনোর যৌক্তিকতা কতটুকু?
মাশরাফি : আমরা জানি সাকিব খুব অভিজ্ঞ একজন ব্যাটসম্যান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সাকিবই ম্যাচটা বের করে এনেছে। কারণ আসলে একটাই, হয়তো সাকিব তিনে আগে পারফরম্যান্স করেছে। ওখানে এখন রুম্মন খেলছে। সাকিবের অভিজ্ঞতা একটু বেশি এ জন্য পাঁচে খেলানো হচ্ছে। নির্দিষ্ট করে বললে ওর জন্য একটু কঠিন হচ্ছে। টি-টোয়েন্টিতে ও সাধারণত এখানে খেলেনি। তারপরও দলের স্বার্থে ও খেলছে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ এতো বছর ধরে ক্রিকেট খেলছে; স্লিপে কোনও নিয়মিত ফিল্ডার নেই কেন?
মাশরাফি : ২০১৫ শুরু থেকেই সৌম্য স্লিপে ফিল্ডিং করছে। সে আজকেও করেছে। ক্যাচ ড্রপ আবার হতে পারে। আগেও বলেছি ক্যাচ মিস হতেই পারে। এটা খেলারই অংশ।
প্রশ্ন : ১০-১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয় ফুটে উঠে; এর কারণ কি?
মাশরাফি : আমরা এর আগে ওই জায়গায় অনেকবার উইকেট হারিয়েছি। ভালো একটা জুটি হওয়ার পর ৮-১০ ওভারে পর পর বেশকিছু উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গেছি। তখন নতুন খেলোয়াড় নেমে ওই চাপ সামলে উঠতে পারেনি। আমরা চেষ্টা করছি, এটা নিয়ে আলোচনাও করেছি। একটু রান কম হলেও উইকেটটা ধরে খেলতে পারি।
প্রশ্ন: মুস্তাফিজের ফেরাটা কতটা স্বস্তির?
মাশরাফি : অস্বস্তির কিছু আমি দেখিনি। মুস্তাফিজের আগে ম্যাচে যা হয়েছে এটাই বাস্তবতা। মুস্তাফিজ একশো ম্যাচ খেললে সবগুলোতেই ভালো খেলবে এটাতো হবে না। ক্রিকেটে এটা সম্ভবই না। প্রত্যাশাটা ওখানে থাকাটাও অস্বাভাবিক। আগের ম্যাচে যা হয়েছে এটা খুবই স্বাভাবিক। আজকের ম্যাচে সে প্রমাণ করেছে ওর মানসিক অবস্থা কতটা ভালো।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন