বিসিএস ক্যাডার হওয়া যাঁদের স্বপ্ন
০৪ মার্চ ২০১৬, ০৮:২৯
কড়া নাড়ছে ৩৭তম বিসিএস। তাই প্রস্তুতি নিন এখন থেকেই। রাজধানীর গণগ্রন্থাগার থেকে ছবি তুলেছেন জাহিদুল করিম সরকারি চাকরিতে সম্মান তো আগেই ছিল। এ বছর থেকে শতভাগ বেতনও বেড়েছে। কাজেই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন এখন দেখতেই পারেন। আপনার জন্যই হয়তো দুয়ারে কড়া নাড়ছে ৩৭তম বিসিএস। ১ হাজার ২২৬টি শূন্য পদের জন্য ২৯ ফেব্রুয়ারি এই বিসিএসের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। ৩১ মার্চ থেকে আবেদনপত্র নেওয়া শুরু হবে। কাজেই প্রস্তুতি নিন এখন থেকেই।
পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আ ই ম নেছারউদ্দিন জানিয়েছেন, ৩৭তম বিসিএসে সবচেয়ে বেশি শূন্য পদ থাকছে প্রশাসন ক্যাডারে। এই বিসিএসের মাধ্যমে ৩০০ জন সহকারী কমিশনার নেওয়া হবে। কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছরের সম্মান ডিগ্রি থাকলেই আবেদন করা যাবে।
কোন পদে কতজন নিয়োগ
সাধারণ ক্যাডারে মোট ৪৬৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন ছাড়াও পুলিশ ক্যাডারে ১০০ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২০ জন, সমবায় ক্যাডারে ৯ জন, ডাকে ৯ জন, আনসার ক্যাডারে ৭ জন, নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারে ৭ জন, ইকোনমিক ক্যাডারে ৬ জন, তথ্য ক্যাডারে ৬ জন ও রেলওয়ে ক্যাডারে ১ জন নিয়োগ করা হবে।
প্রফেশনাল ক্যাডারের মধ্যে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন হিসেবে ২৭২ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন হিসেবে ১৮ জন, মৎস্য ক্যাডারের উপসহকারী পরিচালক হিসেবে ৬৪ জন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে ১৯ জন, কৃষি ক্যাডারে ৫০ জন, বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডারে ৪২ জন, হাঁস-মুরগি উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে ৫ জন, গণপূর্তে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ২৫ জন, সহকারী প্রকৌশলী (ইএম) হিসেবে ১১ জন, রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে ৭ জন, সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী হিসেবে ১ জন, সড়ক ও জনপথ প্রকৌশল ক্যাডারে ১২ জন, সহকারী প্রকৌশলী বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারের সহকারী বেতার প্রকৌশলী হিসেবে ৮ জন, খাদ্য ক্যাডারে ২ জন, মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে ১ জনসহ মোট ৫৩৭ জন নিয়োগ দেওয়া হবে।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের মধ্যে প্রভাষক হিসেবে হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনায় ২২ জন, বাংলায় ২১ জন, অর্থনীতিতে ২০ জন, দর্শনে ১৯ জন, ইতিহাসে ১৯ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ১৮ জন, গণিতে ১৫ জন, ইংরেজিতে ১৪ জন, গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে ১৩ জন, উদ্ভিদবিদ্যায় ৭ জন, কম্পিউটার, ইসলামের ইতিহাস, মনোবিজ্ঞানে ৫ জন করে, ব্যাংকিংয়ে ৪ জন, পরিসংখ্যান, সংস্কৃত ও কৃষিবিজ্ঞানে ৩ জন করে, সমাজকল্যাণে ২ জন, প্রাণিবিদ্যায় ১ জনসহ মোট ২২৪ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে পদসংখ্যা যেকোনো ক্ষেত্রেই কম-বেশি হতে পারে।
অনলাইনে আবেদন
এবারও অনলাইনে আবেদন করা যাবে। ৩১ মার্চ সকাল ১০টা থেকে ২ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। তবে শেষ দিকে বরাবরই চাপ পড়ে। অনেকে দেখা যায়, আবেদনও করতে পারেন না। কাজেই শুরুর দিকে আবেদন করে রাখলে ঝামেলা এড়ানো সম্ভব। পিএসসির ওয়েবসাইট থেকে আবেদন পাওয়া যাবে। টাকা জমা দিতে হবে টেলিটকের মাধ্যমে। ছবি, স্বাক্ষর—এসব ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।
বয়স
বরাবরই মতোই প্রার্থীর বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের ক্ষেত্রে বয়স ৩২ হতে পারবে। সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ক্ষেত্রে শুধু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বেলায় বয়স ৩২ হওয়া যাবে। আপনার সনদে বাবা-মায়ের নাম যেভাবে আছে সেভাবেই সব লিখুন। কোনো কোটা থাকলে সেটি উল্লেখ করুন। কোনো ধরনের ভুল তথ্য লিখবেন না।
প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন এখনই
প্রিলিমিনারি টেস্ট বা প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা হচ্ছে বিসিএসের প্রথম ধাপ। এটিকে বলা যায় লিখিত পরীক্ষার চাবি। মনে রাখবেন, পরীক্ষার আগে কয়েক দিন পড়ে বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়া কঠিন। কাজেই এখন থেকেই প্রস্তুতি নিন। আগামী কয়েক মাসের সঠিক ব্যবহারের ওপরই নির্ভর করছে আপনার বিসিএসের ভবিষ্যৎ।
নিশ্চয় জানেন, নতুন নিয়মে দুই ঘণ্টা সময়ে মোট ১০টি বিষয়ের ওপর ২০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে ৩৫ করে ৭০ নম্বর, বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ৩০, আন্তর্জাতিক বিষয়বলিতে ২০, ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ১০ নম্বর, সাধারণ বিজ্ঞানে ১৫, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি ১৫, গাণিতিক যুক্তি ১৫, মানসিক দক্ষতা ১৫ এবং নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন বিষয়ে ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকে পড়ে আসা পাঠ্যবইয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন। একইভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের বইগুলো থেকে গাণিতিক যুক্তি, সাধারণ বিজ্ঞান, ভূগোলসহ অন্যান্য বিষয়েও জানা যাবে। আর সাধারণ জ্ঞানে দক্ষতা বাড়াতে দৈনিক পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই। প্রতিদিন পত্রিকা পড়ার অভ্যাস আপনাকে বিসিএসে নানাভাবে সহায়তা করবে।