‘বানান ভুলে রক্ষা পেল’ বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ
১১ মার্চ ২০১৬, ০৯:১৭
একটি বানান ভুল দেখে শ্রীলঙ্কার ব্যাংক কর্মকর্তাদের সন্দেহ, আর তাতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ২ কোটি ডলার লোপাট হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বৃহস্পতিবার এই খবর দিয়েছে।
এই ২ কোটি ডলার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা সরানোর চেষ্টা করেছিল।
শ্রীলঙ্কায় সফল না হলেও ৮ কোটি ডলার ফিলিপিন্সে সরাতে পেরেছিল হ্যাকাররা। সেই অর্থের একটি অংশ ইতোমধ্যে ব্যাংক চ্যানেলের বাইরে চলে গেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
চীনা হ্যাকাররা এই কাণ্ড ঘটিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ১০১ কোটি ডলার লোপাট করেছিল বলে ফিলিপিন্সের সংবাদপত্র ‘দি ফিলিপিন্স ডেইলি ইনকোয়ারার’ গত মাসে প্রকাশ করে।
এই অর্থ পাচারের ঘটনাটি এখন বাংলাদেশের সঙ্গে ফিলিপিন্সেও আলোচিত ঘটনা। সেখানেও এর তদন্ত চলছে। উদ্ধারের চেষ্টায় আছে বাংলাদেশ ব্যাংকও।
ইনকোয়ারার বলেছে, সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ সরানো হয় ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার ব্যাংকে।
তাদের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাক করে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ স্থানান্তরের আদেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী অর্থ চলে যায় দুই দেশের দুই ব্যাংকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রয়টার্স বলেছে, শালিকা ফাউন্ডেশন নামে শ্রীলঙ্কার একটি এনজিওর ডয়চে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল ২ কোটি ডলার।
“কিন্তু অর্ডারে ‘foundation’ এর জায়গায় লেখা হয়েছিল ‘fandation’, তাতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। তখন এটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর আটকে দেওয়া হয়। যোগাযোগ করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে।”
রয়টার্স অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছে, শ্রীলঙ্কার সরকারি তালিকায় শালিকা ফাউন্ডেশন নামে কোনো এনজিওই নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, “শ্রীলঙ্কার ব্যাংকে যে ২০ মিলিয়ন ডলার গিয়েছিল, সে অর্থ আমরা ইতোমধ্যে ফেরত পেয়েছি।”
শ্রীলঙ্কায় পাচার হওয়া অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে হিসাবে জমা হয়েছে কি না- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “এখনও জমা না হলেও সেটি জমা হবে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।”
হ্যাকাররা একই সঙ্গে ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকের পাঁচটি অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছিল ৮ কোটি ডলার। ওই অর্থ ক্যাসিনো হয়ে হংকংয়ে পাচার হয়ে গেছে বলে ইনকোয়ারার জানিয়েছে।
“ফিলিপিন্সে যে অর্থ গেছে, তার একটি অংশ এখনও সেখানকার ব্যাংকে আছে। আর কিছু ব্যাংকের বাইরে চলে গেছে,” বলেন শুভংকর সাহা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সন্দেহভাজন ছয়জনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্তে নেমেছে ফিলিপিন্সের মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষ।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন