সিকৃবিতে দ্বন্দ্বের নেপথ্যে শিক্ষক নিয়োগ
১৮ মার্চ ২০১৬, ২০:৫৪
১৮ মার্চ ২০১৬ঃ শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা বিরোধে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি)। বিরোধের জেরে গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। এখন পর্যন্ত এ ঘটনার সুরাহা না হওয়ায় রোববারও ক্লাস-পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা কম। এতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে শিক্ষার্থীদের।
ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ৫৫ জন শিক্ষক নিয়োগে প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন। নিয়োগ প্রক্রিয়ার দায়িত্ব দেয়া হয় রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম শোয়েব। এ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. আবদুল বাসেত।
গত বুধবার শিক্ষক নিয়োগে মৌখিক পরীক্ষার দিন রেজিস্টার ও প্রক্টরের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মৌখিক পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর রেজিস্টার বদরুল ইসলাম শোয়েরের সঙ্গে দেখা হয় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগকারী প্রক্টর মো, আবদুল বাসেতের। সামনি সামনি দেখা পেয়ে নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে তাকে সম্পৃক্ত করে যে অভিযোগ করা হয়েছে সে সম্পর্কে প্রক্টরের কাছে জানতে চান রেজিস্টার। পরে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন শারীরিক লাঞ্ছনার।
প্রক্টোর ও রেজিস্টারের মধ্যকার হাতাহাতির ঘটনায় বিরোধ চরমে উঠে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের। প্রক্টরের অপসারণ দাবি করছেন কর্মকর্তারা। অন্যদিকে রেজিস্ট্রারের অপসরণে আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা।
সহকর্মীকে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ও সংশ্লিষ্ট প্রক্টরের অপসারণ চেয়ে বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫ শিক্ষক ভিসির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। কর্মকর্তারাও প্রক্টরের অপসারনের দাবিতে স্মরকলিপি দেন ভিসিকে। স্মারকলিপিতে রোববার পর্যন্ত সময় বেধে দেন কর্মকর্তারা।
বিরোধ সমাধানে ওইদিন রাতে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ পৃথক বৈঠক করেছেন উপাচার্য, আন্দোলনরত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্থ পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। অনুরোধ করেন দ্রুততম সময়ে বিরোধ মীমাংসারও।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সমস্যা হয়েছে, এ খবর পেয়ে আমরা ক্যাম্পাসে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে ভিসি, আন্দোলনরত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয় নিশ্চিত করেছেন সিকৃবি শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ড. তরিকুল আলম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিয়ষটি সমাধান করতে হবে। এতে যে দোষী হবে তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।’
এ ব্যাপারে সিকৃবির অফিসার্স পরিষদের সভাপতি সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘নিয়োগের বিষয়ে অনৈতিক আবদার না রাখায় রেজিস্ট্রারের গায়ে হাত তোলেন প্রক্টর। আমরা প্রক্টরের অপসারণের জন্য আগামী রোববার পর্যন্ত সময়সীমা বেধে দিয়েছি। এর মধ্যে সমাধান না হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন