দুর্নীতি প্রতিরোধে মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা
১২ এপ্রিল ২০১৬, ১২:১৫
মানবতার মুক্তিদূত মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন রাহমাতুল্লিল আলামিন বা সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ। সমাজ থেকে শিরক-বিদআতসহ প্রচলিত নানা কুকর্ম-অপকর্ম ও দুর্নীতি দূর করে একটি আদর্শ ও শান্তিময় সমাজ গঠন করেছিলেন তিনি। রসুল (সা.) জনসমক্ষে দুর্নীতির ভয়াবহ কুফল তুলে ধরে সুনীতি চর্চার সুফল ও কল্যাণ হাতেকলমে শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
দুর্নীতি প্রতিরোধে রসুল (সা.) নানামুখী কর্মকৌশল অবলম্বন করেছিলেন। অন্তরাত্মার পরিশুদ্ধি, নীতিসম্মত কাজ তথা সত্কর্মে উৎসাহদান, দুর্নীতির কঠোর পরিণতি সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করা ও সর্বশেষ শাস্তির ব্যবস্থা, তার দুর্নীতিবিরোধী কর্মকৌশল ছিল বিশ্বজনীন ও শতভাগ বাস্তবসম্মত।
মানুষের কর্মের উৎস তার অন্তকরণ বা কলব। স্বচ্ছ ও নির্মল অন্তঃকরণে নীতি-নৈতিকতাবিরোধী কোনো পরিকল্পনা অসম্ভব। তাই তিনি সর্বপ্রথম মানুষের অন্তঃকরণ স্বচ্ছ, নির্মল ও পরিশুদ্ধ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন— ‘মানবদেহে রয়েছে একটি মাংসপিণ্ড সেটি সুস্থ থাকলে পুরো দেহ সুস্থ থাকে আর সেটি বিনষ্ট হলে পূর্ণ দেহ বিনষ্ট। সেটি হলো কালব বা অন্তঃকরণ। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীগুলো ব্যাপকভাবে মানুষের মধ্যে প্রাণ পেয়েছে। মহান আল্লাহর বাণী, ‘সফলকাম হয়েছে সেই ব্যক্তি যে তার অন্তরকে শুদ্ধ করেছে এবং ব্যর্থ হয়েছে সে যে সেটা অকার্যকর রেখেছে।’ (আল কোরআন-৯১:৯-১০)। মহান আল্লাহ আরও বলেন— ‘ওই ব্যক্তি সফলকাম হয়েছে যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করেছে’। (আল কোরআন-৮৭:১৪)।
এভাবে তিনি মানুষের হৃদয়-মনকে পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে একে সত্কর্ম ও সদুপদেশ গ্রহণের উপযুক্ত পাত্র হিসেবে গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করেন, যাতে কোনোরূপ নীতিবিরুদ্ধ কাজ অন্তরে প্রশ্রয় পেতে না পারে।
সুন্দর জীবন গঠনের মাধ্যমে ইহ-পরকালের কল্যাণ লাভের ক্ষেত্রে নীতিসিদ্ধ ও সৎ কাজ সম্পাদনের বিকল্প নেই। তিনি মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী প্রচার করেছেন— ‘মুমিন পুরুষ কিংবা নারী যে কেউ সত্কর্ম করবে আমি তাকে নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দিব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।’ (আল কোরআন-১৬:৯৭)। এভাবে অসংখ্য আয়াত ও হাদিসের মাধ্যমে তিনি সুনীতি ও সত্কর্মে উৎসাহিত করেছেন। যাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই দুর্নীতিকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এটা ছিল রসুল (সা.)-এর দুর্নীতি প্রতিরোধী অন্যতম কার্যকরী কর্মকৌশল।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন