একনেকের সভায় ৪৪,১৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯ প্রকল্পের অনুমোদন
০৩ মে ২০১৬, ১৬:১৭
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগসহ মোট ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ৪৪ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এগুলো বাস্তবায়িত হবে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৯ হাজার ২৬৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ টাকা যোগান দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় এ প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প, ৬ হাজার ২৫২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে (ইকুরিয়া-বাবু বাজার লিংক সড়কসহ) মাওয়া পর্যন্ত এবং পাঁচ্চর ভাঙ্গা অংশে ধীর গতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ চার লেনে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ৯১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে জাতীয় মহাসড়কের মাগুরা শহর অংশের রাম নগর মোড় হতে আবালপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প, ১ হাজার ৮৯০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, ৫৩৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে উপকূলীয় ও ঘূর্নিঝড়প্রবণ এলাকায় বহুমুখী ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প, ৭৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রাণীরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প (২য় পর্যায়), ৭০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে উদ্যানতাত্ত্বিক ফসলের গবেষণা জোরদারকরণ এবং চর এলাকায় উদ্যান ও মাঠ ফসলের প্রযুক্তি বিস্তার প্রকল্প, ১৮৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং ৭৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ বেতারের মহাশক্তি প্রেরণ কেন্দ্র ১ হাজার কিলোওয়াট মধ্যম তরঙ্গ ট্রান্সমিটার স্থাপন প্রকল্প।
সাংবাদিকদের ব্রিফকালে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি ঢাকা স্টেশন হতে শুরু হয়ে গেন্ডারিয়া-মাওয়া-পদ্মাসেতু (নির্মাণাধীন) হয়ে ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত সংযুক্ত করবে এবং ভাঙ্গা জংশন হতে কাশিয়ানী জংশন স্টেশন হয়ে পদ্মাবিলা জংশন হয়ে বিদ্যমান রুপদিয়া এবং সিঙ্গিয়া স্টেশনকে সংযুক্ত করবে। ঢাকা-গেন্ডারিয়া সেকশনে ৩ কিলোমিটার ডাবল লাইনসহ প্রকল্পের আওতায় মোট ১৭২ কিলোমিটার নতুন মেইন লাইন নির্মাণ করা হবে। এর ফলে ঢাকা-যশোরের দূরুত্ব ১৮৪ দশমিক ৭২ কিলোমিটার, ঢাকা-খুলনার দূরুত্ব ২১২ দশমিক শূন্য ৫ কিলোমিটার এবং ঢাকা-দর্শনার দূরত্ব ৪৪ দশমিক ২৪ কিলোমিটার কমবে এবং যাত্রা সময়ও কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যার মধ্যে চীন সরকারের ঋণ সহায়তা ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং বাকি ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সরবরাহ করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ওপর দিয়ে ঢাকা থেকে খুলনায় রেলপথের নতুন রুট নির্মাণ করা হবে। নতুন রেলপথ দিয়ে যাতায়াতে রাজধানী থেকে খুলনার দূরত্ব কমবে ২১২ কিলোমিটার। এ রেলপথ দিয়ে খুলনায় যেতে সময় লাগবে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- পরিকল্পনা সচিব তারিক–উল-ইসলাম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কানিজ ফাতেমা এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সচিব ড. শামসুল আলম প্রমুখ।