প্রচ্ছদ

সড়ক যোগাযোগে বিভাগজুড়ে বৈপ্লবিক উন্নয়ন

২৪ জানুয়ারি ২০১৬, ১২:৩৬

ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার

126051517রোববার, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬ ॥ বৃহত্তর সিলেটে নদ-নদীকে গাঙ বলা হয়। আঞ্চলিক এই নামেই নদ-নদীর পরিচিতি। এখানকার জীব বৈচিত্র্যের মূল প্রাণশক্তিই এই গাঙ। আর সেই গাঙগুলোর মধ্যে সব চেয়ে বড় সুরমা ও কুশিয়ারা। ওই দুই নদরীর উভয়পাড়ে বসবাস করেন কয়েক হাজার মানুষ। তাদের সুবিধার গত সাত বছরে সারা দেশেরে ন্যায় সিলেটেও যাগাযোগ খাতের উন্নয়নে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার। প্রতিবন্ধকতাহীন ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে গত মহাজোট সরকারের পাঁচ বছর ও বর্তমান সরকারের দুই বছরে সিলেট বিভাগে সেতু, কালভার্ট ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের হিসাবমতে- যোগাযোগ খাতে গত সাত বছরে সিলেট বিভাগজুড়ে মোট ১৮টি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এতে মোত ব্যয় হয়েছে মোট ৭শ’ ৮৭ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। চারটি জেলায় মোট ৬২টি সেতু, ১৮৬টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।

এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো- সিলেটের কাজিরবাজার সেতু। সুরমা নদীর উপর সেই সেতু নির্মাণ শেষে গত বছর সেটির উদ্বোধনও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু কাজিরবাজার সেতু নয়, সুরমার বুকে আব্দুজ জহুর সেতু পাল্টে দিয়েছে ভাটিবাংলা খ্যাত সুনামগঞ্জের ৫টি উপজেলার ২০ লক্ষাধিক মানুষের জীবনযাত্রা। এছাড়াও কুশিয়ারা নদীর ওপর সুনামপুর-চন্দরপুর সেতু সিলেটের দুই উপজেলা (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) ও মৌলভীবাজারের সঙ্গে যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।

সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে- সিলেট বিভাগে ২০০৯ সালে থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোট ১৮টি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এতে মোত ব্যায় হয়েছে মোট ৭শ’ ৮৭ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। বিগত সাত বছরে সিলেটের চারটি জেলায় মোট ৬২টি সেতু, ১৮৬টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটের কাজিরবাজার সেতু, সুরমা সেতু, বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ (জেড-২৪০৩) সড়ক, ইবিবিআইপি, সিলেট-সালটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়কের মোট ১০টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও বাদাঘাট বিমানবন্দর সংযোগ সড়কের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করণ প্রকল্প সম্পন্ন ও বানিয়াচং-নবীগঞ্জ (জেড-২৪০৫) সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে, সিলেট অঞ্চলে মোট ১০টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এতে মোট ব্যায় হয়েছে ৯শ’ ৮১ লাখ টাকা। ওইসব প্রকল্প শেষ হতে আগামী জুন পর্যন্ত ব্যয় হবে ২০২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরে মোট ১৯৩ কোটি ৯৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত টাকাগুলো দিয়ে ২৮ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার সড়ক, ১৮টি সেতু ও ৪৫টি কালভার্টের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এছাড়া চলমান রয়েছে- সিলেটের বিমানবন্দর বাইপাস ইন্টারসেকশন-লালবাগ-সালুটিকর-কোম্পানীঘঞ্জ সড়কের কাজ। ভোলাগঞ্জ সড়কের জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতিকরণ। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৪৪১ কোটি টাকা। সিলেট জেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীঘঞ্জ-আউসকান্দি মহাসড়কের কেরবানীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর উপর ৭০২ দশমিক ৩২ মিটার লম্বা সেতু নির্মাণ, সুনামগঞ্জ জেলার মদনপুর-দিরাই-শাল্লায় ১৯ কিলোমিটার সড়ক, জামালঘঞ্জ-সুনামগঞ্জে ১৮ দশমিক ৩০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ।

এদিকে, সিলেটে যোগাযোগখাতে আরো ৮টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ১শ’ ৭০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৯টি সেতু ও ১১৬ দশমিক ৪১ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। প্রক্রিয়াধীন প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলো হলো- সিলেট-সুনামঘঞ্জ সড়কের উন্নয়ন প্রকল্প, সিলেট-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়কের লাক্কাতুরা বা বাগান হতে বিমানবন্দর পর্যন্ত ৪ লেনে উন্নীতকর প্রকল্প, শাল্লা-জলসুখা সড়কের নির্মাণ প্রকল্প, গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়ক, ছাতকের অসমাপ্ত সুরমা সেতু নির্মাণ প্রকল্প, পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউসকান্দি সড়কে ৭টি ও নিয়ামতপুর-তাহিরপুর সড়কে ১টিসহ মোট ৮টি সেতু প্রকল্প।

পিএমপি: ২০০৯ সালের জুন থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোট ২২৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ৫শ’ ১ কিলোমিটার সড়ক ও ১৭ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১টি সেতু এবং ২৬টি কালভার্টের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও চলমান রয়েছে ৭৮ কোটি ৪ লাখ টাকার কাজ। ওই টাকা দিয়ে মোট ৯টি সড়কের ১০২ কিলোমিটার জায়গা নির্মাণ করা হবে। ১৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা দিয়ে ৪টি সেতু ও ১৩ কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।

কাজির বাজার সেতু: পূর্ব পাশে ঐতিহ্যবাহী জিতু মিয়ার বাড়ি। আর পশ্চিম পাশ দিয়ে ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে সিলেট নগরীতে প্রবেশ করেছিলেন হযরত শাহজালাল (রহ.)। মধ্যখানে নির্মাণ করা হয়েছে কাজিরবাজার সেতু। বিএনপি সরকারের আমলে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হলেও দীর্ঘ ১০ বছর পর এটি উদ্বোধন করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ৮ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সিলেটবাসীর স্বপ্ন কিছুটা পূরণ হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- ২০০৫ সালে কাজিরবাজার সেতুটিকে চারলেন বিশিষ্ট ৩৬৬ মিটার দীর্ঘ এবং ১৯ মিটার প্রস্থের অত্যাধুনিক সেতু হিসেবে নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়। সেতুটির প্রাথমিক নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ২০০৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান।

সেতুটির নির্মাণকাজ ২০০৭-০৮ অর্থবছরের মধ্যেই সমাপ্ত করার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তী তত্ত¡াবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেতুটির নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেতুটির নকশায় দ্রুটি রয়েছে দাবি করে নির্মাণকাজ পুণরায় শুরু থেকে বিরত থাকে। পরে ২০১২ সালের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট সফরকালে আলীয়া মাদ্রাসা মাঠের জনসভায় তিনি দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। পরে এ বছর যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কাজিরবাজার সেতুর নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলে এর বন্ধ্যাত্বের কিছুটা অবসান ঘটে। পরবর্তীতে বরাদ্দও বাড়ানো হয়।

পরে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে- নবনির্মিত কাজীরবাজার সেতুটি নির্মাণে মোট ১৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে হয়েছে। ৩৯১ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূর্ণ হয়েছে।

এদিকে, কাজিরবাজার সেতুটির নির্মাণকাজ গত ৩০ জুন শেষ হলেও প্রধানমন্ত্রীর জন্য উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিল। প্রধানমন্ত্রী নিজে এসে সেতুটি উদ্বোধন করবেন এমন গুঞ্জন ছিল সিলেটে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী সিলেটে না এসে ঢাকা থেকেই গত বছরের ৮ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সে সেতুটির উদ্বোধন করছেন।

সুনামগঞ্জের আব্দুজ জহুর সেতু: হাওরবেষ্টিত জেলা সুনামগঞ্জ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সুনামগঞ্জ জেলার ৪টি উপজেলার সাথে জেলা সদরের সরাসরি কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। এই লক্ষ্যে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মল্লিকপুর এলাকায় সুরমা নদীর উপর সেতুর নির্মাণকাজ ২০০৫-০৬ অর্থবছরে শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে এ সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৩ কোটি টাকা। পরে সেতুর নকশা পরিবর্তন করে নতুনভাবে ব্যয় ধরা হয় ৭১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। গত বছরের ২০ আগস্ট উদ্বোধনের পরই যানবাহন চলাচলের জন্যে সেতুটি খুলে দেয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান- সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর উপর নির্মিত এই সেতুটি সুনামগঞ্জের উন্নয়নের বাহক হিসেবে কাজ করবে। পর্যটন অঞ্চল গড়ে উঠবে অতি সহজেই। এ অঞ্চলের অর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখবে। সুরমার উত্তর পাড়ে রয়েছে মাছ, সবজি, বালি ও পাথরের বিরাট সম্ভার রয়েছে। সেতু হওয়ায় অতি সহজেই কম খরচে এসব মালামাল পরিবহণ করা সম্ভব হবে। এই সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে জেলার তাহিরপুর, বিশম্ভরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলার বাসিন্দাদের শিক্ষা চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। জেলার সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প ব্যাপক বিকাশ লাভ করবে। বিশেষ করে দ্বিতীয় রামসার সাইট হিসেবে ঘোষিত টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সুনাগঞ্জের হাওরাঞ্চল দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠবে। এছাড়া মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা যাদুকাটা নদী, আদিবাসী অধ্যুষিত বারেকটিলা পর্যটকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে তুলবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান- সুনামগঞ্জবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সুরমা নদীর উপর নির্মিত সেতুর নাম সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুজ জহুরের নামে নামকরণের সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপন পাঠানো হয়। এতে জানা যায় সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর উপর নির্মিত সেতুর নামকরণ করা হয়েছে আব্দুজ জহুর সেতু।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- ২০০৫-২০০৬ অর্থ বছরে সুনামগঞ্জ-কাচিরগাতী-বিশ্বম্বরপুর সড়কের ১ম কিলোমিটারে সুরমা নদীর উপর আব্দুজ জহুর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। অনাকাক্সিক্ষত কারণে সেতুটি অসমাপ্ত অবস্থায় ছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে সেতুটি পুনরায় এডিপি অন্তর্ভুক্ত করে। পরে গত বছরের জুন মাসে ৭১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির কাজ সমাপ্ত করা হয়। সেতুটি নির্মাণের ফলে অত্র এলাকার জনগণের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ৪০২ দশমিক ৬১ মিটার দীর্ঘ সেতুটির স্প্যান সংখ্যা ৭টি, যার মধ্যে ৬টি পিসি গার্ডার ও ১টি স্টিল ট্রাস। সেতুর ২ পাশে এপ্রোচ সড়কের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৫৩০ মিটার। গত বছরের ২০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

চন্দরপুর-সুনামপুর সেতু: বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ-সিলেট সড়কের চন্দরপুর-সুনামপুর এর মধ্যবর্তী কুশিয়ারা নদীতে ২০০০ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৩-০৪ অর্থবছরে। ১৮৬ দশমিক ৭৬ মিটার দীর্ঘ ও ৭ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের এই সেতু নির্মাণের একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। ২০০৩ সালে এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে নির্মিত এন্ড ওহিদুজ্জামান চৌধুরী জয়েন্টভেঞ্চার নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রথমদিকে বেশ দ্রুত গতিতে কাজ হলেও ২০০৫ সালে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণকাজ। ২৪ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও চারটি পিলার ছাড়া আর কিছুই হয়নি।

সওজ সূত্র জানায়- সেতুটির নকশায় কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন হওয়ায় ও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় ২০০৫ সালে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যোগাযোগে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হলেও ক্ষত হয়ে দাঁড়িয়েছিল চন্দরপুর-সুনামপুর সেতু।

২০০৯-১০ অর্থবছরে সেতুটি কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য এটিকে অসমাপ্ত সেতু সমাপ্তকরণ প্রকল্পের আওতায় এনে সেতুর নকশায় কিছুটা পরিবর্তন করে নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে ৭ কোটি টাকা করা হয়েছিল। ঐ সময় সওজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল- ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার অবসান হয়েছে এবং ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নতুন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অসমাপ্ত এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করবে। কিন্তু নানা জটিলতায় তা পেছাতে থাকে। একসময় মানুষের মনে শংকা জেগেছিল-সেতু পূর্ণাঙ্গ হবেতো?

অবশেষে দাঁড়িয়ে থাকা স্তম্ভগুলোকে সেতুতে রূপ দেয়ার দায়িত্ব নেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর অসম্পূর্ণ সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করে তিনি। প্রায় ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ-সিলেট সড়কের চন্দরপুর-সুনামপুর এর মধ্যবর্তী কুশিয়ারা নদীতে নির্মিত এই সেতু সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে সিলেট থেকে বিয়ানীবাজার ও বড়লেখা উপজেলায় যাতায়াতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় বাঁচবে। গত বছরের ২০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

 

সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
0Shares

সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম

ফেসবুকে ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার