সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহনের চাপে ব্রিজ ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশংকা
১৬ জুন ২০১৬, ০৪:০৩
সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ-মোগলাবাজার-মৌলভীবাজার সড়কে অতিরিক্ত পাথর বোঝাই ট্রাক চলাচল করায় এ সড়কে বেশ কয়েকটি ব্রিজ, কালভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙ্গে সিলেটের সাথে সারাদেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছন্ন হয়ে পড়তে পারে। ১৫ টনের অধিক পাথর বোঝাই চলাচলকারী ট্রাকগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে যে কোন সময় ব্রিজ ভেঙ্গে পড়তে পারে। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি সড়কের উভয় সাইড ডেবে যাওয়ার কারণে গতকাল বুধবার সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তে আটকা পড়ে ৪টি ট্রাক উল্টে যাওয়ায় যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী অসংখ্য যানবাহনের যাত্রী সাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এর আগে গত রোববার রাতে মোগলাবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জের মধ্যবর্তী কটালপুর এলাকায় একটি পাকা সেতুর একাংশ ভেঙ্গে পড়লে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গত সোমবার সকালে সড়ক ও জনপদ বিভাগ সেতুটির ভাঙ্গা অংশে লোহার প্লেট বসিয়ে যানবাহন পারাপার করছে। বসানো প্লেটগুলো যানবাহনের চাপে উঠানামা করছে। ফলে যানবাহনগুলো ব্রীজের এক অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে সেতুর দুই প্রান্তে দূর পাল্লার ভারী যানবাহন সহ অসংখ্য যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা দিয়েছে। এতে যাত্রী সাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গত ৯ জুন থেকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুর সেতু সংস্কারের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প সড়ক হিসেবে ভারী যানবাহন সহ সকল ধরনের যানবাহন সিলেট-মোগলাবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়ক দিয়ে চলাচল করায় দক্ষিণ সুরমায় পারাইরচকে মইলুকা সেতু ও ফেঞ্চুগঞ্জের কটালপুরের রত্মা সেতু সহ বেশ কয়েকটি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। স্বাধীনতার পূর্বে হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য এ সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে অসংখ্য মালবাহী ট্রাক বাস এ সেতুগুলো দিয়ে চলাচল করায়। যে কোন সময় পুরাতন সেতুগুলো ভেঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমন আশংকায় সত্য হয়ে দেখা দিলো গত রোববার রাতে। শুধু তাই নয়, এ সড়ক দিয়ে সিলেটের সাথে সারা দেশের একমাত্র বিকল্প সড়ক হিসেবে যানবাহন চলাচল করায় সংকীর্ণ এ সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ধেবে গিয়ে বড় বড় গর্ত দেখা দিয়েছে। গর্তগুলোতে যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। পবিত্র রমজান মাসে এ ধরনের দুর্ভোগের কারণে তাদের গন্তব্য স্থলে পৌছাতে বিলম্ব হওয়ায় সহরী ও ইফতার নির্ধারিত স্থানে করতে ব্যর্থ হওয়ায় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। সিলেট-মোগলাবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়কটি আঞ্চলিক সড়ক হিসেবে ব্যবহত হয়ে আসছিলো। সে অনুপাতে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সম্প্রতি সিলেট-৩ আসনের এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট-মোগলাবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ-মৌলভীবাজারের রাজ নগরের সীমানা পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার করা হয়। কিন্তু গত ১ সপ্তাহে অধিক মাল বোঝাই ট্রাক-বাস, লরি সড়ক দিয়ে চলাচল করায় সংস্কার করা সড়কটি বিভিন্ন স্থানে পিচ গালা উঠে ফাটল ও গর্ত দেখা দিয়েছে। গর্তগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে সড়কটির সাইড ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সড়কটি সংকীর্ণ থাকায় বড় দুটি গাড়ি আসা যাওয়ার সময় মূল সড়ক থেকে গাড়ি চাকা মাটিতে নামার কারণে গর্ত হয়ে কাদার সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে এবং বিভিন্ন স্থানে স্থানে দীর্ঘ যানবাহনের যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে মোগলাবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ সহ বিভিন্ন বাজারে ট্রাফিক বা পুলিশ না থাকায় যানজটের শিকার হচ্ছেন যাত্রী সাধারণ। পবিত্র রমজান মাসে এ অবস্থা থাকায় জনগণের দুর্ভোগের সীমা থাকছে না। ভুক্ত ভোগি মহল গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ট্রাফিক ব্যাবস্থা চালু ও সড়কটি রক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন