যেভাবে দেশে তৈরি হবে ১৪২ তলা টাওয়ার (ভিডিও)
১৬ জুলাই ২০১৬, ২২:৪২
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১৩০ তলার বদলে ১৪২ তলা আইকন টাওয়ার নির্মাণের জন্য সকল সহযোগীতা করবে সরকার। আর এটি নির্মাণ করবে আমেরিকাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কেপিসি। যার কর্ণধার হলেন বাংলাদেশী বংশদ্ভূত কালিপ্রদীপ চৌধুরী। সব ঠিকঠাক থাকলে খুব দ্রুতই চুক্তি সই হবে।
এটি নির্মাণ এবং চুক্তি বিষয়ে এখন পর্যন্ত ৩৬বার বাংলাদেশ সফর করেছেন কেপিসির কর্ণধার কালিপ্রদীপ চৌধুরী।
এ বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ”আমরা প্রস্তুত। তিনি যখনই চাইবেন তখনই সব ঠিকঠাক হবে এবং এতে আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করবো।”
১৪২ তলা এই টাওয়ারের পাশে তৈরি হবে ৫০ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আধুনিক স্টেডিয়াম, বিশাল কনভেনশন সেন্টার এবং শপিংমল সহ মোট ৯ টি স্থাপনা।
এসব নির্মাণে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে চার বিলিয়ন ডলার বা ৩২ হাজার কোটি টাকা।
পদ্মপাতার ছাউনির মত নান্দনিক ভাবে গড়ে তোলা হবে ঢাকা কনভেনশন সেন্টার নামের স্থাপনাটি। ভিতরে থাকবে উন্নত ডিজাইন। আর লবিতে থাকবে এক্সিবিশনের ব্যবস্থা। এছাড়া কনফারেন্স হলে একসাথে বসতে পারবে পাঁচ হাজার মানুষ। আর একসাথে খাবার খেতে পারবে দেড় হাজার মানুষ। এছাড়াও মিটিং রুম, সেমিনার সহ আধুনিক সবই থাকবে এখানে।
আইকনিক টাওয়ার নামের ১৪২ তলা টাওয়াটিতে থাকবে সেভেন স্টার হোটেল, শপিংমল, এক্সিবিশন সেন্টার ও থিয়েটর। নির্মাণের পর এটিই হবে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ টাওয়ার।
এর পাশের স্থাপনার মধ্যে আরো রয়েছে, হাসপাতাল, নার্সং কলেজ, সুইমিং ক্লাব, বোর্ড স্টেডিয়াম এবং গলফ ক্লাব। এছাড়া থাকবে আবাসিক ভবনও।
প্রকল্পটি পূর্বাচলের ১৯ নং সেক্টরের সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট (সিবিডি) এলাকায় নির্মিত হবে। তবে প্রস্তাবিত ভবনের উচ্চতার বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ অনাপত্তি ছাড়পত্র দেয়নি।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ও বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ ভবনটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এছাড়া, প্রস্তাবিত জমির মাটি ১৩০ তলা ভবন নির্মাণের জন্য উপযুক্ত কিনা তা খতিয়ে দেখবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিআরটিসি বিভাগ। তারা সেখানকার ফাউন্ডেশনের মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত দেবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত সেক্টরের ৬০ একর জমির মূল্য নির্ধারণের জন্য রাজউকের জমির মূল্য নির্ধারণ কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা আগামী সাত দিনের মধ্যে কাঠা/একর প্রতি জমির মূল্য নির্ধারণ করবে।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন নির্মিত হচ্ছে সৌদি আরবের জেদ্দায়। দুই শ’ তলা এই ভবনের উচ্চতা হবে ৩ হাজার ২৮০ ফুট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভবন ২০১০ সালে নির্মিত হয়েছে দুবাইয়ে। ১৬৩ তলা এই ভবনের উচ্চতা ২ হাজার ৭১৭ ফুট। এছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য সুউচ্চ ভবনের মধ্যে রয়েছে সাংহাইয়ের ১২৩ তলা সাংহাই টাওয়ার এবং সৌদির মক্কায় ১২০ তলা মক্কা রয়াল ব্লক টাওয়ার। প্রতিবেশী দেশ ভারতের মুম্বইতে ১১০ তলা একটি ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স হিসেবে ঢাকার ভবনই হবে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ ভবন। এছাড়া উচ্চতা ও আয়তনের দিক দিয়ে এটি হবে বিশ্বের সর্বোচ্চ তৃতীয় বৃহত্তম ভবন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে রাজউকের পক্ষ থেকে ‘ফোকাল পয়েন্ট’ হিসেবে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক উজ্জ্বল মল্লিককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তার মাধ্যমে ভবনটি নির্মাণে সার্বক্ষণিক তথ্য সরবরাহ, যোগাযোগ ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ জন্য আগামী তিন মাসের মধ্যে ভবনের প্রযুক্তিগত সকল দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করা যাবে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এ ভবন নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ তদারকি করবে। সরকার ও নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে ভবনটি নির্মাণের চিন্তা করা হচ্ছে।
http://youtu.be/4p_Epht46e4
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন