হলি আর্টিসান মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার
১৮ জুলাই ২০১৬, ০২:৫৭
ঢাকা: গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিটি অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। এ প্লটে নার্সিং হোম করার জন্য ১৯৭৯ সালে মালিককে বরাদ্দ দেয়া হয়। ১৯৮২ সালে নার্সিং হোমের নির্মাণ কাজ শুরু করে। কিন্তু রেস্টুরেন্ট বা বেকারি করার জন্য কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি। নার্সিং হোমের নামে বরাদ্দ করা প্লটের একটি অংশে হলি আর্টিসান বেকারি গড়ে তোলা হয়েছে।
রোববার সচিবালয়ে আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত সভায় একখা জানানো হয়। সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্ব করেন।
সভায় অবৈধভাবে গড়ে তোলার কারণে হলি আর্টিসান বেকারির মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা অনুমোদনহীন স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম জোরদার করা হবে। দীর্ঘদিন যাবত এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসব স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার যাওয়ার সুযোগ করে দিতে কিছুটা সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ প্লট মালিক সে সুযোগ কাজে লাগাননি। বিভিন্ন এলাকায় ১৬২৫টি অবৈধ স্থাপনার একটি তালিকা করা হয়েছে। তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে এবং এ সংখ্যা আরো বাড়বে। এ সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আবাসিক এলাকার প্রকৃতরূপ ফিরিয়ে আনা হবে।
এসব স্থাপনার কারণে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে বলেও মনে করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, ১৬২৫টি অবৈধ স্থাপনার মধ্যে উত্তরায় ২১৫টি, মিরপুরে ৫৮০টি, গুলশান-বারিধারায় ৫৫২টি, ধানমন্ডি-লালবাগ এলাকায় ১৭৩টি এবং মতিঝিল-খিলগাঁও এলাকায় ১০৫টি রয়েছে। এসব স্থাপনার মালিক রাজউকের লিজশর্ত ভঙ্গ করে আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফলে আবাসকি এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
সভায় জানানো হয়, বিভিন্ন এলাকায় এ পর্যন্ত ৩৩৩টি র্যাম্প ও ২৩৬টি কারপার্কিং স্পেসের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৩ কোটি ৭১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এরমধ্যে উত্তরায় ১১৬টি র্যাম্প ও ৯৮টি কারপার্কিং স্পেসের স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা আদায়, গুলশান-বারিধারায় ২০৮টি র্যাম্প ও ৪৯টি কারপাকিং স্পেসের স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ৮৬ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং ধানমন্ডি-লালবাগ এলাকায় নয়টি র্যাম্প ৮৯টি কারপাকিং স্পেসের স্থাপনা উচ্ছেদ ও দুই কোটি ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, উচ্ছেদ অভিযান জোরদার করার পাশাপাশি তালিকাভুক্ত স্থাপনার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র দেয়া হবে।
সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. খন্দকার আখতারুজ্জামান, রাজউকের চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান মুন্সী, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম আরিফ-উর-রহমানসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই গুলশান-২ এর হলি আর্টিসান বেকারি নামে একটি স্প্যানিশ রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় জঙ্গিরা। ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে তারা। পরদিন যৌ অভিযানে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার এবং পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন