নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
২৬ জুলাই ২০১৬, ২০:৩৯
এখন থেকেই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে দলীয় সংসদ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নির্বাচনের আর মাত্র দুই বছর তিন মাস বাকি আছে। এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
এজন্য এলাকায় গিয়ে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরা ও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোরও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে এমপিদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে জঙ্গি বিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তোলারও নির্দেশ দেন তিনি। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ৪টায় সংসদ ভবনের নবম তলায় সরকারি দলের সভাকক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের জরুরি বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, সরকারের যেসব উন্নয়ন কাজ হয়েছে, আরও কী কী উন্নয়ন কাজ করা হবে সেগুলো ভালোভাবে তুলে ধরতে হবে। নির্বাচনের তিন মাস আগে নির্বাচনের জন্য দলকে পুরোপুরি প্রস্তুত রাখতে হবে। এজন্য এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।
এমপিদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি না করার নির্দেশও দেন প্রধানমন্ত্রী। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য কাজ করার তাগিদ দেন তিনি।
এ সময় তিনি নারী এমপিদের নিজস্ব নির্বাচনী এলাকা তৈরি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। নারী এমপিরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহিলা আসনে যেসব এমপি আছেন, তাদের নিজ নির্বাচনী এলাকা তৈরি করার দরকার নেই। তাদের আমি মনোনয়ন দেবো না। আপনাদের যেজন্য এমপি বানিয়েছি সেই সংগঠন গোছানোর কাজ করুন। নিজে নিজে এমপি প্রার্থী হওয়া যাবে না, মনোনয়ন দেবো আমি। কে মনোনয়ন পাবে সেটা আমি দেখবো। আপনারা সংগঠনের জন্য কাজ করুন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে যেন শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে, মানুষের নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয়-সে বিষয়ে কাজ করতে হবে। জনগণের সঙ্গে যত সম্পৃক্ততা বাড়ানো যাবে জঙ্গিবাদ তত দ্রুত প্রতিরোধ করা যাবে। এজন্য জঙ্গিবাদ বিরোধী যে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে বা হচ্ছে, সেই কমিটিগুলোর সঙ্গে প্রত্যেক এমপিকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।
নিজ নিজ এলাকায় জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশ করারও নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ তৎপরতায় নারীদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দলের নারী সংগঠন ও নারী এমপিদেরও উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে।
সংসদীয় দলের একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, সভায় বগুড়ার সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান ও নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমান মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, মন্ত্রীরা এমপিদের সঙ্গে ভালো আচারণ করেন না। এ সময় প্রধানমন্ত্রী নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে না জড়ানোর নির্দেশ দেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী এক সংসদ সদস্য এসব তথ্য জানান। সভায় জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক চিফ হুইপ উপাধক্ষ্য আব্দুস শহিদ, হুইপ আতিকুর রহমান আতিক, বগুড়ার সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান, আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদ ড. হাছান মাহমুদ, সংসদ সদস্য বিএইচ হারুন, শামীম ওসমান, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা আলোচনায় অংশ নেন।
একজন সংসদ সদস্য বলেন, সব পুলিশ আমাদের আপন না। তাই আমাদের সর্তক থাকতে হবে। তার এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কল্যাণপুরের জঙ্গি দমন তো পুলিশই করেছে। তারা ভালোভাবেই অভিযান পরিচালনা করেছে এবং সফল হয়েছে। আমাদের বিশেষায়িত সোয়াত বাহিনী ও পুলিশকে আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম রাতে অভিযান না চালিয়ে দিনের বেলায় চালাতে, যাতে সাধারণ মানুষের কোনো সমস্যা না হয়।