মানুষের সাফল্যের পথে বাঁধা প্রদানকারী ১০টি নেতিবাচক চিন্তা
০৩ আগস্ট ২০১৬, ১৮:৩৮
আপনি যখন ইতিবাচক চিন্তা করবেন তখন আপনার মন প্রফুল্ল থাকবে। নেতিবাচক চিন্তা আপনার মনকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তুলে একই ভাবে আপনাকে করবে অবসাদগ্রস্ত। কোন কাজে আপনি সফল হতে পারবেনা। নেতিবাচক চিন্তা পরাজয়ের আগেই পরাজয়ের গ্লানি এনে দেয়। তাই আমরা আপনাকে জানাব মানুষের নিজের বিষয়ে ১০টি নেতিবাচক চিন্তার কথা যা আপনি এড়িয়ে চলতে পারেন।
‘সব পাব অথবা কিছুই পাব না’ এমন চিন্তাঃ এ ধরণের চরমপন্থী চিন্তা থাকার ফলে আপনি জানবেন হয় আপনি পাবেন নতুবা পাবেন না। এর ফলে আপনার আত্মবিশ্বাস বেশী থাকবে। এটা মনে রাখবেন অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আপনার পতন ঘটাতে পারে। জীবনে চলার পথে কোন কিছুই পারফেক্ট থাকেনা। পাওয়া না পাওয়ার মাঝামাঝিও অনেক কিছু থাকে সে ব্যাপারে প্রস্তুত থাকুন।
অতিমাত্রায় সরলীকরণ করাঃ যখন কোন খারাপ কিছু ঘটে আপনি অনুমান করেন যে সেটি আবার ঘটবে! যেমন আপনি কারো কাছ থেকে সময় চেয়েছেন, কিন্তু তিনি আপনাকে সময় দেয়নি এতে আপনি মানসিকভাবে ধরেই নিলেন যে আপনাকে এর পরের বেক্তিটিও সময় দিবেনা! এ ধরণের চিন্তা ভাবনার ফলে আপনি আত্মবিশ্বাস সম্পূর্ণ রুপে হারিয়ে ফেলবেন যা আপনাকে হতাশায় নিমজ্জিত করে দিবে।
মানসিক ফিল্টারঃ মানসিক ফিল্টার বলতে বুঝাচ্ছে মানুষের হতাশা জনক অবস্থাকে ঢেকে রাখার বা এড়িয়ে যাবার ব্যবস্থা। মানসিক ফিল্টারে একজন মানুষ একটি হতাশা জনক ও নেতিবাচক ঘটনাকে অন্য ইতিবাচক ঘটনা দিয়ে বিচার করে মানসিকভাবে রিলাক্স হতে চায়। মানুষ তাঁদের ভুল বা হতাশার বিষয়টি এড়িয়ে সাফল্য দিয়ে ঢাকতে চায় এতে করে ওই হতাশা না কেটে বরং তা পরবর্তীতে আরও প্রকট ভাবে দেখা দেয়। তাই মানসিক ফিল্টারিং এর মাধ্যমে হতাশাকে, নাপারাকে দূরে সরিয়ে নয় জয় করতে লড়াই করুন।
ইতিবাচক বিষয়কে অবহেলা করাঃ এ ধরণের চিন্তার ক্ষেত্রে আপনি যেকোনো ইতবাচক বিষয়কেই নিজের অজান্তে নেতিবাচক ভাবে ভাবতে থাকেন। এভাবে চিন্তার ফলে আপনি আপনার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে পারেন। ইতিবাচক চিন্তা কে পাশ কাটিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করার ফলে আপনার কর্ম ক্ষেত্রে এর গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে। যে কাজ আপনি সাফল্য পেতেন সে কাজে সাফল্য নাও আসতে পারে।
অগ্রিম সিদ্ধান্তে পৌঁছনোঃ এ ক্ষেত্রে আপনি নিজে থেকে আগে ভাগেই কি হবে হবেনা এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে চলে আসেন অনেকটা ভবিষ্যৎ বক্তার মত। যেমন আপনার বন্ধু যদি আপনাকে কল ব্যাক না করে তাহলে আপনি আগে ভাগেই ধরে নেন আপনার বন্ধু আপনাকে অপছন্দ করে অথবা আপনার ব্যবসায় যদি সাময়িক সমস্যা দেখা দেয় আপনি ধরে নেন আপনার ব্যবসা লস হবে। এ ধরণের চিন্তা ভাবনা আপনার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীলতাঃ এটা এমন একটি বিষয় যেখানে আপনি এমন একটি পর্যায়ে চিন্তা ভাবনা করবেন যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় অর্থাৎ ঘটনার থেকে প্রতিক্রিয়া বেশী দেখাবেন। সাধারণ সমস্যাকে বিরাট করে দেখবেন। একে ডাক্তারি ভাষায় সিজফ্রেনিয়া সিন্ড্রোম বলা হয়ে থাকে। একজন সিজফ্রেনিয়া রোগী মানসিক ভাবে ভিন্ন জগতে বসবাস করে বাস্তবের সাথে যার কোন মিল নেই।
যুক্তিহীন আবেগঃ অনেক সময় আপনি যুক্তিহীন আবেগ দেখান। বাস্তব জীবনে যুক্তিহীন আবেগের স্থান নেই। আপনি যখন যুক্তিহীন কোন আবেগের বশে কোন সিদ্ধান্ত নিবেন তখন সেটা আপনাকে হতাশ করবে। তাই সাফল্য পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই যুক্তিহীন আবেগ দেখানো পরিহার করতে হবে।
করতে হবে অথবা অবশ্যই করতে হবে এমন চিন্তাঃ আপনি যখন মনে মনে কোন কাজ করতে হবে অথবা অবশ্যই করতে হবে এমন ভাবনা পোষণ করেন অতঃপর দিন শেষে কাজটি করতে পারেন না তখন আপনি হতাশায় মগ্ন হবেন। আপনি নিজের অজান্তেই ভাবতে শুরু করবেন কিভাবে অন্য মানুষরা কাজটি করছে? এতে করে আপনি হতাশায় মগ্ন হবেন।
নিজেকে অপরাধী ভাবাঃ আপনি কোন ব্যবসায় বিনিয়োগ অথবা শেয়ার ক্রয় করলেন পরে দেখা গেল আপনি বিরাট লসে পরে গেলেন। এ ক্ষেত্রে আপনি নিজেকে পরাজিত, ব্যর্থ অথবা দুর্ভাগা ভাবা শুরু করেন। নিজের বিষয়ে এ ধরণের নেতিবাচক ভাবনা আপনাকে আরও হতাশ করে তুলতে পারে। আপনি আপনাকে যে ভাবেই চিন্তা করুন না কেন এতে মানুষের কিছু আসে যায়না এতে আপনারই ক্ষতি। আপনি সব সময় চেষ্টা করবেন আপনাকে দিয়ে যা হবার তাই ঠিক সময়ে হবে, অতএব অপেক্ষা করুন লেগে থাকুন।
সব কিছু ব্যক্তিগত ভাবে নেয়াঃ আপনার মাঝে এমন ভাবনা থাকা নেতিবাচক যেখানে আপনি আপনার দোষ বা গুন থাকুক বা নাই থাকুক আপনি নিজের ভাবতে শুরু করেন। এধরনের সমস্যা কে সংক্ষেপে “the mother of guilt” বলা হয়ে থাকে। সব কিছুকে ব্যক্তিগত ভাবে নেয়াকে সব সময় সবাই ভালো চোখে দেখেনা অনেকে এতে আপনাকে ভুলও বুঝতে পারে। কেউ একজন কোন কথা বলল আপনি না জেনেই ধরে নিলেন আপনাকেই বলা হয়েছে সেটি। এধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে আপনার সাথে আপনার আশে পাশের মানুষের সম্পর্ক নষ্ট হবার সম্ভাবনা বেশী।