দৃশ্যমান হতে চলেছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু
০৯ আগস্ট ২০১৬, ১৭:০৯
অবশেষে দৃশ্যমান হতে চলেছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।শিগগিরই সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণে বাস্তব রুপ নিতে যাচ্ছে।দেশের সর্ববৃহদ এ সেতুর মূল অবকাঠামোগত নির্মাণপ্রস্তুতি এখন চলছে জোরেশোরে।এরই মধ্যে সেতুর মূল অবকাঠামো (সুপারস্ট্রাকচার) নির্মাণের প্রথম স্প্যান মাওয়া এলাকায় এসে পৌঁছেছে।মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এগুলো জাহাজ থেকে খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।অন্যদিকে সেতুর এসব স্প্যানগুলো চীনের কারখানায় তৈরি হয়ে পর্যায়ক্রমে চীন থেকে আরও সুপারস্ট্রাকচার আসবে।এসব স্প্যানগুলো পিলারের উপর স্থাপন শুরুর মধ্য দিয়েই দৃশ্যমান হতে শুরু করবে পদ্মা সেতু।
এদিকে গত ২৯ জুলাই মংলা থেকে পদ্মা সেতুর সুপারস্ট্রাকচারের প্রথম স্প্যান বার্জে করে মাওয়ার উদ্দেশে নদীপথে পাঠানো হয়।সোমবার এসব মালামালবাহী জাহাজটি মাওয়া এলাকায় পৌঁছায়।গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে জাহাজটি খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।লোহা বা স্টিলের তৈরি এই স্প্যানের ল্যাব টেস্টসহ অন্যান্য টেস্ট এখানে সম্পন্ন করার পর আগামী ডিসেম্বরে পিলারের উপর স্প্যান স্থাপনের কাজ শুরুহবে।তবে এখন চলমান রয়েছে সুপারস্ট্রাকচার স্থাপনের আগের কাজগুলো।মূল সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সুপারস্ট্রাকচারে মোট ৪১টি স্প্যান থাকবে।প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য হবে ১৫০ মিটার এবং আনুমানিক ওজন ২ হাজার ৯০০ টন।
এদিকে রোববার থেকে জাজিরা প্রান্তে ভায়াডাক্টের (ভূমিতে সংযোগ সেতু) পাইলের কাজও শুরু হয়েছে।এটির কাজও এগিয়ে চলছে।এছাড়া সেতুর পাইলিং কাজের জন্য উচ্চ ক্ষমতার আরেকটি হ্যামারও এখন সমুদ্রপথে রওনা হয়েছে।নেদারল্যান্ডস থেকে বাংলাদেশের কুতুবদিয়া চ্যানেলে হয়ে জাহাজে করে মাওয়ায় নিয়ে আসা হবে এটি।নতুন হ্যামারটি আসার পর পাইল স্থাপন কাজের গতি বেড়ে যাবে।
সবমিলিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ৯আগষ্ট পর্যন্ত পদ্মাসেতু প্রকল্পের সার্বিক বাস্তবায়ন কাজ শেষ হয়েছে ৩৮ শতাংশ।এ পর্যন্ত মোট ২৭টি পাইলের কাজ শেষ হয়েছে।আর নদীশাসন,এ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও সব প্যাকেজ মিলিয়ে সার্বিক অগ্রগতি এখন ৩৮শতাংশের মতো বলে সেতু কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো: আব্দুল কাদের গতকাল জানান,মাওয়ায় পাশে কুমারভোগে নির্মিত বিশাল ওয়ার্কশপেই স্প্যান ফিটিং করে আগামী ডিসেম্বরে তা স্থাপন কাজ শুরু করা হবে।পদ্মা সেতুর সুপারস্ট্রাকচার ফিটিংয়ের জন্য মাওয়া পস্তুত রয়েছে।আর সেতুর পিলারের ওপর ১৫০ মিটার দীর্ঘ এই সুপারস্ট্রাকচারে থাকছে গার্ডারসহ দ্বিতল স্টিলের সেতু।যার নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন এবং ওপর দিয়ে অন্য যানবাহন।এক পিলার থেকে অন্য পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার।দুই পিলারের মাঝেই বসিয়ে দেওয়া হবে সুপারস্ট্রাকচারটি।আর এর ফলে দৃশ্যমান হতে শুরু করবে পদ্মা সেতু।রোববার থেকে জাজিরা প্রান্তে ভায়াডাক্টের (ভূমিতে সংযোগ সেতু) পাইলের কাজও শুরু হয়েছে।এটির কাজও এগিয়ে চলছে বলে তিনি আরো জানান।
উল্লেখ্য,পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। চার লেনবিশিষ্ট এই সেতু ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২২ মিটার চওড়া। এটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আগে থেকেই জানানো হয়েছে।