যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মুখোমুখি বিতর্কে ট্রাম্পকে হারিয়ে দিলেন হিলারি
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১১:৫৯
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির দুই প্রার্থী প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিয়েছে, যা শেষ পর্যন্ত ভোটের হিসেব-নিকেশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ডেমোক্রেট প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন প্রথম বির্তকে প্রতিদ্বন্দ্বীকে ঘায়েল করতে চেয়েছেন জাতিগত বিদ্বেষ, লিঙ্গ বৈষম্যমূলক আচরণ এবং কর খেলাপের মত অভিযোগ এনে।
অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী আবাসন ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রতিপক্ষের মন্ত্রীত্বের দিনগুলোর কাজের সমালোচনা করেছেন, প্রশ্ন তুলেছেন বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে তার আন্তরিকতা নিয়ে।
স্থানীয় সময় সোমবার রাতে নিউ ইয়র্কের হেম্পস্টেডে হোফসট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাম্প ও হিলারির মধ্যে ৯০ মিনিটের এই বিতর্কে সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন এনবিসি টিভির লেস্টর হল্ট। চূড়ান্ত ভোটের লড়াইয়ের আগে আরও দুটি বিতর্কে দেখা যাবে হিলারি ও ট্রাম্পকে।
>> বিবিসি জানিয়েছেন, হিলারি ও ট্রাম্পের এ টেলিভিশন বিতর্ক ১০ কোটি দর্শক সরাসরি দেখেছেন
>> টুইটার জানিয়েছে, বিতর্কের সময় ৬২ শতাংশ ব্যবহারকারী ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করে টুইট করেছেন, হিলারির নাম লিখেছেন ৩৮ শতাংশ ব্যবহারকারী।
>> রয়টার্সের সোশ্যাল সেন্টিমেন্ট ট্র্যাকারেও বেশিরভাগ ব্যবহারকারী ট্রাম্পকে উদ্ধৃত করছেন।
বিবিসি ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়, প্রথম বিতর্কে দুই প্রার্থী অভিবাসন নীতি, ইরাক যুদ্ধ, নিউক্লিয়ার অস্ত্র, পররাষ্ট্র নীতিসহ চলমান বিশ্ব পরিস্থিতি ও তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে উত্তপ্ত বাকযুদ্ধে নামেন।
ট্রাম্প আঙুল তোলেন হিলারির ইমেইল কেলেঙ্কারির দিকে। অভিযোগ করেন, হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ‘বিস্তৃত’ হয়েছে।
“যখন এটি ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠী ছিল তখন আপনি মন্ত্রী হন, আর এটি এখন ৩০টির বেশি দেশে বিস্তৃত, তখন আপনি একে থামাতে পারবেন বলে আমি মনে করি না।”
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক যুদ্ধের বিরোধিতা করেন এবং ক্ষমতায় গেলে ইসলামিক স্টেটকে পরাজিত করতে ইরাকের সব তেল তুলে নেয়ার ঘোষণা দেন। উত্তর কোরিয়াকে থামাতে চীনের সাহায্য নেয়ারও আগ্রহ প্রকাশ করেন রিপাবলিকান প্রার্থী।
কয়েক সপ্তাহ আগে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হিলারি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের মত ‘শারিরীক সক্ষমতা’ রাখেন কী না- সে প্রশ্নও তোলেন এ ধনকুবের।
অন্যদিকে হিলারি তার বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর মধ্যে থাকা ‘বর্ণবাদ’ দমনে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন, আহতও হয়েছেন অনেকে। ‘সন্দেহভাজন মনে হওয়ায়’ পুলিশ এদের উপর গুলি করার কথা জানালেও, বেশিরভাগ সময় হতাহতদের কাছে কোন অস্ত্র ছিল না বলে মার্কিন গণমাধ্যমের খবর।
নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর ট্রাম্প কেন তার আয়করের খতিয়ান প্রকাশ করেননি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হিলারি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে ট্রাম্পের ‘শুভাকাঙ্ক্ষী’ আখ্যায়িত করে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পুতিনকে আমন্ত্রণ জানানোয় রিপাবলিকান প্রার্থীর সমালোচনা করেন সাবেক এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বারাক ওবামার জন্ম ‘যুক্তরাষ্ট্রে কী না’ নির্বাচনী প্রচারে এমন প্রশ্ন তোলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘বর্ণবাদী আচরণের’ অভিযোগ আনেন হিলারি।
চলতি বছরের ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচনী জরিপগুলোতে দুই প্রার্থীর পক্ষে কাছাকাছি জনসমর্থন লক্ষ্য করা গেছে।
বিবিসির সর্বশেষ জরিপে হিলারির পক্ষে ৪৮ শতাংশ আর ট্রাম্পের পক্ষে ৪৬ শতাংশ সমর্থনের কথা বলা হয়েছে।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন